আফ্রিকার বন্যজীব অধ্যুষিত দেশে প্রকৃতির এক বিস্ময় নাইভাসা হ্রদ। সেখানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতার স্মৃতি ডা:অভিষেক দাসের কলমে, ছবিতে।
আফ্রিকার মাসাইমারা আর অ্যাম্বোসেলির বিরাট জীববৈচিত্রের কথা তো আমরা সবাই জানি।কিন্তু এখানেই লেক নাইভাসা আর এক প্রাকৃতিক বিস্ময় তার হরেক রকম উদ্ভিদ ও প্রাণীর বৈচিত্রপূর্ণ সম্ভার নিয়ে। লেক নাইভাসা একটি মিষ্টি জলের সরোবর কেনিয়ার গ্রেট রিফ্ট ভ্যালিতে। কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির উত্তর পশ্চিমে নাকারু প্রদেশে নাইভাসা শহরের কাছে এর অবস্হান। এটি ইউনেস্কো ঘোষিত একটি রামসার এলাকা। এখানে প্রায় ৪০০ র ওপর প্রজাতির পাখি তো আছেই, তার সাথে রয়েছে জলহস্তীরা একটা বিরাট সংখ্যায়।মাসাইমারার ভ্রমণ পর্ব শেষ করে নাকারু ন্যাশানাল পার্কে যাবার পথে আমাদের তাই বিরতি নিতেই হল নাইভাসা হ্রদের ধারে।
প্রকৃতির কোলে আয়েশ করে লাঞ্চ।টলটলে জরে ভরা হ্রদের ধারে। তারপরে নৌকা ভ্রমণের পালা। জলে দেখতে পাচ্ছি জলহস্তীরা ভাসছে, চড়ে বেড়াচ্ছে। কী হবে যদি কোন জলহস্তী হঠাৎ ভেসে উঠে উল্টে দেয় নৌকা অথবা হঠাৎ করে উঠে আসে কোন সাপ! এসব আজব দুশ্চিন্তা মাথায় আসতে আসতে দূর হয়ে গেল একবার যখন নৌ-ভ্রমন শুরু হল। প্রকৃতির সৌন্দর্যে ডুবে গেলাম আমরা।
জলহস্তীর দিকে যখন বোট এগিয়ে যাচ্ছে একটু একটু উদ্বেগ তো হচ্ছিলই। যতই শান্ত, ভদ্র আর অলস লাগুক না কেন, জলহস্তীরা আফ্রিকার অন্যতম ভয়ানক জীব। দিগন্ত বিস্তৃত হ্রদ। আশেপাশের নৌকার যাতায়াতে যে ঢেউ উঠছে তাতেই দুলে উঠছে আমাদেরটা। পাখিদের বৈচিত্র আমাদের মুগ্ধ করে দিল। সে নানা প্রজাতির পেলিকান হোক, বা হোক স্টর্ক অথবা ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে হাঁসের দলের ভেসে যাওয়া। শান্তিপূর্ণ সহাবস্হান। প্রকৃতর বিস্ময়। আফ্রিকান ফিশ ঈগল ঝাঁপিয়ে পড়ছে জলে আর মুখে তুলে নিয়ে যাচ্ছে মাছ। দেখেও রোমাঞ্চ লাগে কাছ থেকে। প্রকৃতিপ্রেমিকদের কাছে যেন সত্যিই স্বর্গ। আমাদের ডি এস এল আর ক্যামেরা তো কথা বলা থামাচ্ছিলই না। এক ঘন্টার নৌকা ভ্রমণের শেষে যেন আবার কোন সময়ে ফিরে দেখার ক্ষিধেটা বেড়ে গেল।
ছবি: লেখক
লেখক পরিচিতি: ডা:অভিষেক দাস কলকাতার একজন অস্হিশল্য চিকিৎসক। পেশার পাশাপাশি অরণ্যে ভ্রমণ তাঁর নেশা।
ความคิดเห็น