top of page

প্রকৃতি ও উপাসনা: সর্পদেবী মনসা

  • ..
  • Dec 9
  • 6 min read

Updated: Dec 10

ভারতীয় সনাতন ধর্ম ও সংস্কৃতিতে প্রকৃতির বিভিন্ন অনুষঙ্গকে মানুষ ভক্তিতে ও ভয়েও উপাসনা করে থাকে। এর মধ্যে সাপের উপাসনা গোটা ভারত জুড়েই বহুল প্রচলিত একদম প্রাচীন যুগ থেকেই। বাঙলায় ও ভারতের অনেক স্থানে দেবী মনসার পুজোর প্রচলন আজও প্রাচীন রীতি মেনে হয়ে আসছে। প্রকৃতিকে নিজেদের জীবনে স্থান দিয়ে ভারতীয় সংস্কৃতি একই সাথে প্রকৃতি ও মানুষের বাঁচার যে বার্তা দেয় মনসাদেবীর উপাসনা তারই প্রতীক। আলোচনায় সুমন্ত ভট্টাচার্য্য


ছবি: Wikimedia commons
ছবি: Wikimedia commons


প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গের উপাসনা ভারতীয়দের মধ্যে পুজো প্রাচীন যুগ থেকে চলে আসছে। সনাতন ধর্মের মানুষ প্রকৃতির নানা উপাদানকে অর্চনা করে প্রকৃতির সাথে আমাদের যে সহাবস্থান তাকেই স্বীকৃতি দেয়।  ভক্তিতে বা ভয়ে বিভিন্ন জীবজন্তু কে উপাসনা করা সারা দেশেই বহুল প্রচলিত। এর মধ্যে সাপের কথা উল্লেখ করতেই হয় বিশেষ করে। সাপকে কে না ভয় পায়! আর সারা ভারতে অনেক প্রজাতির সাপ। তাদের বেশিরভাগই নির্বিষ, কিন্তু এটাও ঘটনা আজকের যুগেও  সারা পৃথিবীতে সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা ভারতেই সবথেকে বেশি। দেশে প্রতি বছর ৫০-৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে সাপের কামড়ে যা পৃথিবীর পরিসংখ্যানের আর্দ্ধেক। ফলত: সাপের থেকে রক্ষা পেতে ধর্মবিশ্বাসী মানুষের মধ্যে নানা লোকাচার চালু আছে প্রাচীন যুগ থেকেই।


মহাভারতে আছে নাগরাজ বাসুকির কথা। জৈনদের সর্পদেবী ছিলেন পদ্মাবতী। বৌদ্ধশাস্ত্রে আছেন জঙ্গুলি তারা। দক্ষিণ ভারতে আছেন মঞ্চাম্মা। মহীশূরে সাপের দেবী মুদামা। অন্ধ্রে পূজিত হন নাগাম্মা।   উত্তর পূর্বে গারো  উপজাতির সর্পদেবী মাড়াই। খ্রিস্টপূর্ব ৩২৭ অব্দে গ্রিকবীর আলেকজান্ডারের সঙ্গে ভারতে আসা সঙ্গীদের বর্ণনায় ভারতবর্ষে সর্পপূজার জনপ্রিয়তার প্রমাণ পাওয়া যায়। মহাভারতে যে নাগবংশের কথা আছে তাদের উল্লেখযোগ্য নাম হল নাগরাজ বাসুকি যাকে সমুদ্র মন্থনে দড়ি হিসাবে ব্যবহার করা হযেছিল। আর একজন বিষ্ণু ভগবানের অনন্তশয্যায় থাকা শেষ নাগ ।


বৌদ্ধ দেবী জঙ্গুলি তারা
বৌদ্ধ দেবী জঙ্গুলি তারা

 

"শুভক্ষণে বন্দো দেবী মনসার চরণ।

ওমা কপিলা ছাড়িয়ে গো আসরে দেহ মন।।

শুন শুন সর্ব্বজন করি নিবেদন।

মনসার মঙ্গল গীত করহ শ্রবণ।।"




পূর্ব ভারতের কথায় আসা যাক। এখানে পশ্চিমবঙ্গে, পূর্বতন পূর্ব বাংলা বা বর্তমান বাংলাদেশে, অসম, ওড়িশায় সর্পদেবী মনসার পুজো বহুল প্রচলিত।  উত্তর ভারতেও তার পুজোর প্রচলন রয়েছে। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান, দেবীভাগবত, পদ্মপুরানে আছে দেবী মনসার উল্লেখ। তবে এগুলি অপেক্ষাকৃত পরের দিকে রচিত পুরান।  বলা হয়ে থাকে তিনি আদতে তথাকথিত নিম্ন সমাজের দেবী, কিন্তু সাপের কামড় তো কাউকেই ছাড়ে না। ফলে ধীরে ধীরে সমস্ত শ্রেণীর মধ্যেই মনসার পুজো, বিশেষত: গ্রাম বাংলায় প্রচলিত হয়। তার বিস্তার কিভাবে হয় এই নিয়ে মধ্যে যুগে অর্থাৎ সুলতানি আমলে বেশ কিছু কাব্য রচিত হয় বাংলা ভাষায় মনসার জয়গান করে। এর মধ্যে মনসামঙ্গল, মনসাবিজয়ের নাম  উল্লেখযোগ্য। বিশেষত: মনসামঙ্গল কাব্যের সাথে যেন বাংলার সমস্ত এলাকা তাদের যোগসূত্র খুঁজে পায়। এই কাব্যের বিভিন্ন চরিত্র যেমন চাঁদ সদাগর, বেহুলা, লখিন্দর, নেতি ধোপানি- এদের নামের স্মৃতিতে বহু জায়গায় অনেক স্থান আছে বাংলার বিভিন্ন দিকে। এমনকি বাংলার অনেক নদীকেই স্থানীয় মানুষ এই কাব্যে বর্নিত গাঙ্গুর নদ বলে চিহ্নিত করে।  এমনটাই প্রভাবশালী বাংলায় মনসাদেবীর আরাধনার।

লোককথা বা পুরানে মনসার জন্ম সম্বন্ধে বিবিধ তত্ত্ব আছে। কোথাও বলছে তিনি শিবের কন্যা, কোথাও কাশ্যপ মুনির।  মূলত: শ্রাবন মাসের সংক্রান্তিতে দেবীর পুজো হয়। আসলে বর্ষার সময় তো সাপের প্রজনন ঋতু। সর্প দংশনের ঘটনাও বেশি ঘটে এই সময়ে।  ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতেও হয়ে থাকে। আবার শ্রাবণের শুক্লাপঞ্চমী যা নাগপঞ্চমী নামে পরিচিত তখনও তার পুজো হয়। বলা হযে থাকে এইদিনই জন্মেজয়ের সর্পনিধন যজ্ঞ থেকে নাগকূলকে রক্ষা করেছিলেন মনসাপুত্র আস্তিক।   নাগপঞ্চমী যদিও সারা ভারতেই পালিত হয় বিভিন্ন স্থানে। সাপের মূর্তি বানিয়ে, কোথাও বা মহাদেবের পুজো হয়। কারণ মহাদেবের গলাতেও ঝোলে সাপ। বিষ হরন করে তিনি নীলকন্ঠ। প্রসঙ্গত: দেবী মনসার আর এক নাম বিষহরি। কারণ তার আরাধনা করে মানুষ  সাপের বিষ দূর করার জন্য। আবার কোন লোককথা মতে  সমুদ্রমন্থনে ওঠা বিষ ধারন করে শিবের যে কষ্ট হয়েছিল তা দূর করেছিলেন শিবরই মানসকন্যা।  রাঢ় বাংলায় জৈষ্ঠমাসের দশমী তিথিতে দশহরা ব্রত পালন করে মনসা পুজো  শুরু হয় যা চলে আশ্বিন মাস অবধি।বছরের নানা সময়ে বিভিন্ন জায়গায় মনসাপুজোর চল থাকলেও জৈষ্ঠ্যমাসের শুক্লা দশমীতে দশহরার দিনই মা মনসার বছরের প্রথম স্নানযাত্রা শুরু হয়। মনে করা হয়, বর্ষার আগে সর্পকুলের বাড়বাড়ন্ত হয় এই দিন থেকেই। তাই দশহরার দিনে মা মনসার পুজো করে দেবীকে সন্তুষ্ট রাখা হয়। আবার অম্বুবাচী তিথিতেও আষাঢ় মাসে তাঁর পুজো হয়।

 দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় বিশ্বকর্মা পুজোর দিন আশ্বিন মাসে দেবীর পুজো হয়। একে ওই অঞ্চলে রান্না পুজো বলা হয়।  ওইদিন রান্না হয় না। তাই আগের দিন সারা রাত রান্না চলে। পুজো করা হয় উনুনকে। এখানে উনুনকেই মনসার প্রতীক বলে মনে করা হয় । মাছসহ বিভিন্ন পদ রান্না করে দেবীকে উৎসর্গ করা হয়।

ree

নদীতে ভাসানো হয় কলার ভেলা।   দেবীর এমন মহিমা যে বুধোখালি নামে এক গ্রামে ২০০১ সালে খুব সাপের উপদ্রব হওয়ায় তারা অকালে মনসার পুজো শুরু করেন দুর্গাপুজোর আগে। যা এখনও পালন হয়ে আসেছে।

রাঢ় বাংলায় সব জেলায় গ্রামে গ্রামে মনসার পুজো হয়। সর্বত্র  আগে অনেক বন ছিল। সেখানে সাপের উপদ্রব। আবার এখন তার বেশিটাই চাষের জমি হয়ে গেলেও সাপ তো পিছু ছাড়েনি। তাই  দেবী মনসা স্বমহিমায় বিরাজমান। এমনকি এই পুজোয় ধূমধাম অনেক স্থানেই দুর্গা বা কালীপুজোর থেকে কম নয়। জায়গায় জায়গায় গাছের নীচে থাকে মনসার থান। এই থান কথাটি 'স্থান' শব্দ থেকে এসেছে। দেবীর কোন মূর্তি হয়ত সেখানে থাকে না।  বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখতে পাবেন বিভিন্ন শাল, অশত্থ, পিয়াল, বটের নীচে অনেক পোড়ামাটির মূর্তি-হাতি, ঘোড়া এসবের মূর্তি।   এগুলোই হল পুজোর থান।  এবং  এই অঞ্চলে এই সব থানে মনসার সাথে আর এক লৌকিক দেবতা ধর্মরাজেরও পুজো হয়।


ree


প্রাচীন কালে তৈরি হওয়া পাথরের বা ব্রোঞ্জের মনসার মূর্তি বাংলার বিভিন্ন স্থানে পাওয়া গেছে উত্তর থেকে দক্ষিণে। মনসার মহিমা জায়গায় জায়গায় এতটাই কালক্রমে বড় হযে উঠেছে যে কোথাও কোথাও তিনি মানুষের কাছে দেবী দুর্গার সমার্থক হয়ে গেছেন।

দশম শতকের ব্রোঞ্জ নির্মিত একটি মনসা মূর্তি যা জার্মানির সংগ্রহালয়ে রয়েছে
দশম শতকের ব্রোঞ্জ নির্মিত একটি মনসা মূর্তি যা জার্মানির সংগ্রহালয়ে রয়েছে

মনসার পুজোর মূর্তিতে তাই কোথাও কোথাও দেবীর চারপাশে ঠিক দূর্গামূর্তির মত লক্ষ্মী, সরস্বতী, গনেশ বা কার্তিকের মূর্তি দেখা যায়। তবে বেশিরভাগ সময় তার মূর্তির মাথায় থাকে সাপের সাতটি ফনা। এক্ষেত্রে কোবরা বা কেউটে সাপের মূর্তি একটা বড় প্রভাব ফেলে জনমানসে। যদিও আমাদের দেশে কেউটে ছাড়াও চন্দ্রবোড়া বা রাসেল ভাইপার, কমন ক্রেইট বা চিতি আর স- স্কেলড ভাইপারের কামড়েই বেশি মৃত্যু ঘটে। কিন্তু কেউটের ওই ফনা, ফনার পিছনে চক্রাকার দাগ- এগুলোর একটা বড় প্রভাব আছে।  

ree


মূর্তিতে কোথাও কোথাও বেহুলা-লক্ষীন্দরের মূর্তিও থাকে মনসার সঙ্গে। কোথাও মনসার স্বামী জরৎকারু মুনি আর নেতি ধোপানির। কোথাও মনসার মূর্তির কোলে তাঁর পুত্র আস্তিকের মূর্তিও থাকে যে রাজা জন্মেজয়ের সর্প-নিধন যজ্ঞ থেকে সর্পকূলকে রক্ষা করেছিল। দেবীর চার হাত। তিন হাতে থাকে সাপ, এক হাতে বরাভয় মুদ্রা। গায়ের রঙ হলুদ।  এক চোখ তার কানা। কোথাও তার বাহন হাঁস, কোথাও তিনি পদ্মফুলের উপর আসীন।


দক্ষিণ ভারত থেকে উদ্ধার একটি পাথর নির্মিত মনসা মূর্তি
দক্ষিণ ভারত থেকে উদ্ধার একটি পাথর নির্মিত মনসা মূর্তি



মনসার মূর্তির পাশাপাশি আর একটা অদ্ভুত জিনিস আছে- মনসার চালি। এটা একটা অসাধারণ টেরাকোটা শিল্পকর্ম।  চালিতে মনসা ছাড়াও আরো দেবদেবীও থাকেন। বাঁকুড়ার পাঁচমুড়ো গ্রামের চালি খুব বিখ্যাত। অনেকে শৌখিনতার কারণেও তা সংগ্রহ করে থাকেন। তবে দামি জিনিস হওয়ায় এর প্রচলন কম। মূর্তি বা মনসার ঘটে পুজোর প্রচলন বেশি।



পাঁচমুড়ার মনসা চালি।  ছবি: Wikimedia commons
পাঁচমুড়ার মনসা চালি। ছবি: Wikimedia commons

 


তা এই জাগ্রত দেবী মনসা এখন আর শুধু সাপের দেবীই নন, সুখ সমৃদ্ধি চাওয়ার দেবীও হয়ে উঠেছেন কালক্রমে।

বাঁকুড়া শহরের কাছে  এক্তেশ্বর একটি শৈব তীর্থ। এখানে বারো হাতের প্রাচীন একটি বাসুকি নাগের মূর্তিকে স্থানীয় মানুষ মনসা বা খেঁদারানির মূর্তি বলে পুজো করে। বাসুকি ছিল পুরান মতে নাগবংশের রাজা। মূর্তির মাথায়  বারো ফনা বিশিষ্ট সাপের ফনা। এই মূর্তি প্রায় ৩০০০ বছরের প্রাচীন। অর্থাৎ  নাগদেবতার পুজো কত প্রাচীন তা এর থেকেই বোঝা যায়।


 এক্তেশ্বর।   ছবি: Wikimedia commons
এক্তেশ্বর। ছবি: Wikimedia commons


বাঁকুড়ার রাউতখন্ড গ্রামে আছে জগৎগৌরির মন্দির। এখানে সারা বছর দেবীর মনসা রূপে পুজো হয়।  আর দুর্গাপুজোয় পুজো পান দেবী দুর্গা রূপে। রাঢ় বঙ্গের এমন অনেক গ্রামে আছে জগৎগৌরি মন্দির। যেমন বর্ধমানের কালনার কাছে নারকেলডাঙ্গা গ্রামে।

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের কাছে অযোধ্যা গ্রামে দশহরা উপলক্ষে মনসাপুজোর বড় মেলা বসে। দেবী এখানে মাটির কলসে অবস্থান করেন। কলসের দুপাশে তিনজন করে ছ’জন মহিলা থাকে। গ্রামের মহিলারা মূখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেন এই পুজোয়।

রাঢ় বঙ্গে অনেক গৃহস্থ বাড়িতে ঘটে ও পটে পুজো হয় মা মনসার। এমনকি সাপের ঝাঁপিকেও পুজো করা হয়।  যেখানে পুজো হয় সেখান সিজ বা মনসা গাছ থাকে। গাছ না থাকলে সেই গাছের ডাল আনা হয়। অনেক পরিবার মনসা মন্দিরও বাড়িতেই প্রতিষ্ঠা করেছেন।



পটচিত্র
পটচিত্র


যেহেতু মনসা আদিতে ছিলেন লোক-দেবী, সাধারণ মানুষই এর পুজো করতেন। পরে ব্রাহ্মণ পুরোহিতরা পুজোপাঠ শুরু করেন। এখন তো এই পুজো বারোয়ারি পুজোর রূপ নিয়েছে। ঘটা করে চাঁদা সংগ্রহ করা হয় সর্বত্র থেকে। রাতের বেলা পুজো হয়। এই উপলক্ষে বাঁকুড়া শহরে বড় বড় শোভাযাত্রা হয়।


মনসা গাছের নীচে পুজো
মনসা গাছের নীচে পুজো

 


বাংলাদেশের বগুড়ার মঙ্গলকোটে পাওয়া গেছে মনসার আদিতম প্রতিমা।গুপ্তযুগের এই প্রতিমাগুলির সময় ৫/৬ শতক।এ পর্যন্ত বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গে আটচল্লিশটিরও বেশি মনসা প্রতিমা আবিষ্কৃত হয়েছে।মনসার যেসব প্রস্তর ও ধাতব প্রতিমা পাওয়া যায় সেগুলো প্রায় সবগুলি মুসলমান পূর্বযুগের। মুসলমান আগমনের পর মনসা প্রতিমা নির্মাণ রীতিতে পরিবর্তন আসে। প্রস্তর ও ধাতব প্রতিমার পরিবর্তে ক্রমান্বয়ে মৃন্ময় প্রতিমার প্রচলন শুরু হয়।

 শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় প্রাচীন মনসার শিলামূর্তির পুজো হয়।  বীরভূমের কেঁদুলিতে চন্ডী মন্দিরে অম্বালিকা নামে একটি সাপের ফনা যুক্ত দেবী মূর্তি আছে  যা প্রায় হাজার বছরের পুরানো।

মনসা খুব রাগী দেবী বলে পরিচিত। তাই তাঁর পুজো খুব শুদ্ধাচারে করেন ভক্তরা। পুজোর দিন অরন্ধন থাকে বাড়ি বাড়ি। গোবর-জল দিয়ে শুদ্ধ করা হয় চারপাশ। কেলেওকড়া বলে একটি ফল পুজোয় ব্যবহৃত হয়। পুজো শেষে দুধ দিয়ে এই তেতো ফলের এক টুকরো মুখে দেওয়ার রীতি। এতে নাকি সাপে কাটলেও বিষ অকেজো হয়ে যায়।

 মনসা পুজো উপলক্ষে হয় জাপান গানের আসর। দেবীকে নিয়েই  বাদ্য যন্ত্র সহকারে এই গান গাওয়া হয়।  এমনকি বিবাহ উৎসবেও এই গান গাওয়া হয়।

 

তবে ভারতে সবথেকে বিখ্যাত মনসা মন্দিরটি কিন্তু আছে হরিদ্বারে। এটি নাকি আদি শঙ্করাচার্য়ের দ্বারা নির্মিত।   আর একটি উল্লেখযোগ্য  মন্দির আছে হরিয়াণার পঞ্চকুলায়।


হরিদ্বারে মনসা মন্দির
হরিদ্বারে মনসা মন্দির

এভাবেই প্রাচীন যুগ থেকে আজও মনসা পুজোর জনপ্রিয়তা প্রমাণ দেয় সাপকে মানুষ কতটা সমীহ করে ও প্রকৃতির এই উপাদান কিভাবে সারা ভারতেই সনাতন ধর্ম ও সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে গেছে। এই আবেগ ও ভাবধারাকে কাজে লাগিয়ে প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণ নিয়ে সচেতনতা বিস্তারে আরো উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

 পঞ্চকুলায় মনসা মন্দির
পঞ্চকুলায় মনসা মন্দির

লেখক পরিচিতি: লেখক পেশায় চিকিৎসক। প্রকৃতি ও অরণ্যপ্রেমী। 'বনেপাহাড়ে' ওয়েবজিনের সম্পাদনার দায়িত্বে।

Comments


86060474-00b1-415d-8c11-9c4471c9c5e7.png
Royal_Bengal_Tiger_Kanha.JPG

Editor: Dr. Sumanta Bhattacharya
 

  • Facebook

follow our facebook page to stay updated

© 2021 by Boney Pahare. All rights reserved.

bottom of page