অরণ্য মানে শুধু গাছের সবুজ, পাহাড়ের ধূসর, আর পলাশের লাল নয়। ঝর্ণার ছলছল, পাখির কলতান, কিংবা ভ্রমরের গুঞ্জনও নয়। অরণ্যে যারা থাকে, কাজ করে, তাদের জীবনে আছে একাকীত্ব, আছে নির্জনতা, আছে অবসাদ। সেই সঙ্গে আছে, অন্ধকার ছিঁড়ে বেরিয়ে আসা এক টুকরো সতেজ আলোর মত ভালোবাসাও। সেই সব নিয়েই ছোটগল্প সাহিত্যিক ও পূর্বতন বনবিভাগের কর্তা নীল মজুমদারের কলমে।

রেস্টহাউসের পাশেই উর্মিলার ছোট্ট অফিস। অফিসের জানলা দিয়ে ও আমার গাড়ি
দেখতে পেয়েছিল বোধহয়। পোর্চের সামনে গাড়ি থামতেই, দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে
বলল, ‘গুড আফটারনুন স্যার’।
গাড়ি থেকে নেমে আমি বললাম, ‘গুড আফটারনুন, কেমন আছো উর্মিলা’?
ঘাড় কাত করে উর্মিলা বলল, ‘খুব ভালো আছি স্যার’।
‘খুব’ এবং ‘ভালো’ শব্দ দুটির ওপর ওর বিশেষ জোর দেওয়া আমার কান
এড়ায়নি। হতাৎই মনে হল, ও কি জানে, আমি কেন এসেছি এবং সেই কারণেই
নিজেকে হাসিখুশি দেখাবার অতিরিক্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে! কে জানে! থমথমে
মেঘ করে আছে অনেক্ষণ ধরে, বৃষ্টির নামগন্ধ নেই। বাগানের সিলভার ওক গাছ
গুলো এলোমেলো হাওয়ায় নুয়ে পড়ছে মাঝেমাঝে। বিকেলের মলিন একটু আলো
এখনও লেগে আছে আকাশে।
‘হটাৎ ঠিক করে ফেললাম এখানে আসব, ওয়্যারলেসে তোমাকে খবর দেওয়ার
সময় পেলাম না’।
‘ঠিক আছে স্যার, কোনো অসুবিধা নেই। শুধু’- কথাটা মাঝপথে ছেড়ে দিয়ে
উর্মিলা বলল, ‘ড্রইং হলে ভীষণ গরম লাগবে। আপনার জন্যে কি লনে চেয়ার
রাখতে বলব’?
বলার অবশ্য প্রয়োজন হলনা। রেস্ট হাউসের চৌকিদার বেতের চেয়ার, টেবিল,
টেবিলের ওপর জলের গ্লাস রেখে গেল। বসতে বসতে আমি বললাম, ‘বোসো
উর্মিলা, তুমি কি কিছু বলতে চাইছ’?
চোখ তুলেই নামিয়ে নিল উর্মিলা, আস্তে আস্তে বলল, ‘কই না তো’।
উর্মিলা যেন একটু আড়ষ্ট হয়ে আছে আজ। বেশ অপ্রতিভ। দিন কুড়ি পঁচিশ পর
দেখছি। গায়ের রং মলিন। একটু রোগাও লাগছে কি! মাস দুয়েক আগে, দেরাদুন
আর মুসৌরির ট্রেনিং শেষ করে যখন আমার এই ডিভিশনে প্রবেশনার হয়ে জয়েন
করেছিল, উর্মিলা ছিল কচি বাঁশের মত সতেজ। সপ্রতিভ এবং নিঃসঙ্কোচ।
ডিভিশনের এই রেঞ্জে উর্মিলার ‘রেঞ্জ ট্রেনিং’ নির্ধারিত হয়েছে। মনে আছে, যেদিন
ওকে প্রথম এখানে নিয়ে এসে কাজকর্ম বুঝিয়ে দিচ্ছিলাম, চারিপাশের জঙ্গলের দিকে
বিহ্বল হয়ে তাকিয়ে ও জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘এরপর এখানে আমাকে একাই থাকতে
হবে স্যার’?
‘না না, একা কেন’, ওকে উৎসাহ দিয়ে বলেছিলাম, ‘অফিসে তোমাকে সাহায্য
করার জন্যে থাকবে ছ’সাত জন কর্মচারী, ফীল্ডে তোমার অধীনে কাজ করবে
কুড়ি বাইশ জন, একটা গাড়ি থাকবে এবং তার ড্রাইভার। তাছাড়া তোমার
কোয়ার্টারে কাজ করার জন্যে একজন মহিলা ঠিক করে দিতে বলেছি। সে
ব্যাবস্থাও আশাকরি হয়ে যাবে দু’তিন দিনের মধ্যেই’।
অন্যমনস্ক ভাবে বাঁহাতের তর্জনীতে ওড়না জড়াতে জড়াতে উর্মিলা বলেছিল, ‘এরা
তো সকলেই কর্মচারী, স্যার আমার সঙ্গে দুটো কথা বলার মত কেউ’ - ।
‘আমাদের চাকরিটাই নিঃসঙ্গতার উর্মিলা’। বলতে ভালো না লাগলেও আমি
বলেছিলাম, ‘এখানে থাকে উর্দ্ধতন কিংবা অধঃস্তন কর্মচারী। এখানে কেউ বন্ধু
হয়না’।
সেই উর্মিলা, যার বিরুদ্ধে বেশ সিরিয়াস ধরণের একটি অভিযোগ এসেছে আমার
কাছে। সেও আবার লিখিত ভাবে, যার তদন্ত করতে আজ আমি এসেছি। লক্ষ্য
করলাম আজও উর্মিলা আঙ্গুলে ওড়না জড়াচ্ছে অন্যমনস্ক ভাবে।
‘বর্ষা তো প্রায় এসে গেল, তোমার নার্সারির স্টক রেডি হয়েছে তো’?
‘নার্সারিতে সমস্যা ছিল একটা, আপনি তো সব জানেনই’।
‘তুমি না বললে কি করে জানবো, এখানের জন্যে তুমিই আপাতত আমার চোখ
কান’।
খানিক্ষণ চুপ করে থেকে উর্মিলা বলল, ‘স্যার, নার্সারিতে লেবার আসা বন্ধ হয়ে
গিয়েছিল’।
‘সেকি, কেন’?
উত্তেজিত ভাবে উর্মিলা বলল, ‘স্যার আমি নিজে এ বিষয়ে প্রথমেই কিছু বলতে
চাইনা। আপনি স্টাফদের কাছ থেকে খবর পেতেন, সেটাই ভালো হত’।
‘কি ব্যাপার বল তো’? আমি অধৈর্য হয়ে বললাম, ‘তুমি আজ এতো অচেনা
বিহেভ করছো কেন? তুমি কি আগে কখনও’ - বলতে বলতে দেখি উর্মিলা
অন্যদিকে তাকিয়ে প্রাণপণে নিজেকে সামলাবার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে চা এসে
পড়ায় সম্ভবত ও হাঁফ ছেড়ে বাঁচল।
চায়ে চুমুক দিয়ে প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে আমি বললাম, দু’মাস আগে এপ্রিলের
মাঝামাঝি যখন তোমাকে তোমার কোয়ার্টারে পৌঁছে দিয়েছিলাম, তুমি কি
বলেছিলে তোমার মনে আছে?
ছেলেমানুষের মত ঘাড় নেড়ে উর্মিলা বলল, ‘সব মনে আছে। আমি বলেছিলাম,
এই বাড়িটাতে দুটো না হয়ে একটা রুম হলেই ভালো হত। আপনি অবাক হয়ে
বলেছিলেন, কেন? আমি বলেছিলাম, আমি একটা রুমে শুয়ে থাকব আর অন্য
রুমে ইঁদুর খুট খুট শব্দ করবে -! আপনি হেসে বলেছিলেন তখন কি হবে, ভয়
করবে? – না স্যার ঠিক ভয় নয়, আমি বলেছিলাম, আমি যে একা সেটা নতুন
করে আবার মনে পড়ে যাবে’।
‘ইঁদুররা কি সত্যি খুট খুট করতে আসে মাঝে সাঝে ?
হাসতে হাসতে উর্মিলা বলল, ‘না স্যার না, ইঁদুর নেই মোটেই’।
আমার জীপের ওপর একটা পাথর এসে পড়ল একদিন।সামনের কাচ ক্র্যাক হলেও কাচ ছিটকায়নি। অল্পের ওপর দিয়েই গেছে। একটাগাছ কেটে দড়ি বেঁধে রেখেছিল, পাশ দিয়ে গাড়ি গেলে টেনে গাড়ির ওপর ফেলবেবলে। ফেলেও ছিল। কিন্তু টাইমিং ঠিক হয়নি। শুধু একটা হেডলাইট ভেঙ্গেছে।
‘যাক, বাঁচা গেছে’, একটা সিগারেট ধরিয়ে বললাম, ‘কি ব্যাপার খুলে বলবে?
এইবার একটু যেন সহজ হয়ে উর্মিলা বলল, ব্যাপার তেমন কিছুই নয় স্যার।
এখান থেকে চার কিলোমিটার দূরে একটা গ্রাম আছে, সোনাপাড়া। সেখানের ছয়
সাত জন মহিলা প্রায়ই জঙ্গলে ঢুকে ছোটো সাইজের সেগুন গাছ কেটে সরিয়ে
ফেলে। স্টাফরা যে জানেনা তা নয়। কিন্তু ধরতে গেলেই ওই মহিলারা
শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনে বলে ভয়ে কেউ ওদের ঘাঁটায়না। আমি খবর পেয়ে
কয়েকজন মহিলা কনস্টেবল নিয়ে গিয়ে হাতে নাতে ধরে চালান করে দিয়েছি।
তারপর থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত’।
‘ঝামেলা মানে’?
‘ঝামেলা মানে, যেমন, আমার জীপের ওপর একটা পাথর এসে পড়ল একদিন।
সামনের কাচ ক্র্যাক হলেও কাচ ছিটকায়নি। অল্পের ওপর দিয়েই গেছে। একটা
গাছ কেটে দড়ি বেঁধে রেখেছিল, পাশ দিয়ে গাড়ি গেলে টেনে গাড়ির ওপর ফেলবে
বলে। ফেলেও ছিল। কিন্তু টাইমিং ঠিক হয়নি। শুধু একটা হেডলাইট ভেঙ্গেছে।
আমি প্রায়ই বেনামী চিঠি পাই। কোনোটাতে লেখা থাকে হাত কেটে নেব,
কোনোটায় পা ভেঙ্গে ফেলব। এখানের ভাষাটাতো আমি এখনও রপ্ত করতে
পারিনি, কর্মচারীদের কাউকে দিয়ে চিঠি পড়াই। খানিকটা পড়ে ওরা বলে, খারাপ
কথা লেখা আছে ম্যাডাম, বলে মুখ লাল করে উঠে চলে যায়’।
‘ছিঃ এতসব ঘটে গেছে, তুমি আমাকে একবার বলারও প্রয়োজন মনে করোনি’!
কাতর ভাবে উর্মিলা বলল, ‘স্যার এগুলো সব আমার ধারণা। আমি কোনোমতেই
প্রমাণ করতে পারবনা যে সোনাপাড়া গ্রামের লোকেরাই এসব করেছে’।
‘তাতে কি, ঘটেছে তো তোমার সাথেই’।
‘আমি কিছু গায়ে মাখিনি স্যার, এসব তো হবেই একটু’।
‘তারপর’?
‘তারপর নার্সারি। সোনাপাড়া থেকে আমার সবচেয়ে বড় নার্সারি প্রায় পৌন
কিলোমিটার দূরে। নার্সারিতে কাজ করার সব লেবাররাই আসে সোনাপাড়া আর
পাশের মালোনি গ্রাম থেকে। ওরা জোট পাকিয়ে সবাই মিলে একসঙ্গে কাজে আসা
বন্ধ করল। কয়েকদিন অপেক্ষা করে, গার্ড পাঠিয়ে ওদের ডেকেও লাভ হলনা বলে
আমি দূরের একটা গ্রামে গিয়ে, নিজে বলে কয়ে লেবার নিয়ে এসে কাজ শুরু
করিয়ে দিয়েছি। তাতেই ক্ষেপে গিয়ে ওরা’ –
‘ওরা কি’?
উর্মিলা আমার দিকে তাকিয়েই চোখ নামিয়ে নিল। আস্তে আস্তে বলল, ‘আমার
ধারণা, আমার বিরুদ্ধে যে কমপ্লেন পেয়ে আপনি আজ এনকোয়্যারি করতে
এসেছেন, সেটাও ওদেরই করা’।
মনে মনে চমকে উঠলেও যথাসম্ভব নিরুত্তাপ ভাবে বললাম, ‘কমপ্লেনের কথা কে
বলল তোমায়’?
‘ওরাই বলেছে! স্যার ওদের নিজেদের মধ্যেও জাত নিয়ে ভীষণ দলাদলি। একদল
ঘোঁট পাকায় তো আরেক দল আমার কাছে এসে সব বলে যায়। বলতে বলতে
একটা লম্বা নিঃশ্বাস ফেলল উর্মিলা।
এই তাহলে এক পক্ষের বয়ান। অন্য পক্ষেরটা শুনতে হবে আগামী কাল। এত
তাড়াতাড়ি এই পাকচক্রে জড়িয়ে পড়ল উর্মিলা। ছটফটে, প্রাণবন্ত, আবেগ প্রবন
উর্মিলা। ভাবতে গিয়েই মনে হল এটাও তো ট্রেনিংয়েরই অংশ। কাদার মধ্যে
থেকেও কি করে গা বাঁচিয়ে রাখতে হয়, এটাও তো ওকে শিখতে হবে।
প্রসঙ্গ পালটে আমি বললাম, তোমাকে আর একটা কাজের কথা বলেছিলাম, মনে
আছে?
আছে স্যার।
উর্মিলার অফিসের চাপরাশি ইতিমধ্যেই ওর অফিসের ব্রীফকেশটা রেখে গিয়েছিল।
সেটা খুলে স্পাইরাল বাউন্ড একতাড়া কাগজ বার করে উর্মিলা বলল, ‘আদর্শ গ্রাম’
এর প্রস্তাবের কাজটা তো? গতকালই লিখে শেষ করেছি’।
‘গুড, কোন গ্রাম সিলেক্ট করলে’?
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে উর্মিলা বলল, ‘সোনাপাড়া’।
‘সেকি, কেন’? আমি জিজ্ঞাসা না করে থাকতে পারলাম না।
‘স্যার, আপনিই একবার বলেছিলেন না, সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে ভালো উপায়
হল, সমস্যা ‘ফেস’ করা। আমার জন্যে যে সমস্যা ওরা তৈরি করেছে, এখনও
করছে, আমি ঠিক করেছি এইভাবেই সেটা ফেস করব’।
ফালা ফালা করে আকাশ ছিঁড়ে দিচ্ছে বিদ্যুৎ। গুরু গুরু মেঘ ডাকার শব্দ শুনতে
পাচ্ছি। উঠে দাঁড়িয়ে একটু ইতস্তত করে উর্মিলা বলল, আজ আর একটা অসুবিধা
হয়েছে স্যার। রেস্ট হাউসের খানসামা ছুটি চেয়েছিল, ওকে ছুটি দিয়েছি। তখন
তো জানতাম না, আপনি আজ আসবেন। চৌকিদার কে বললে হয়তো-‘
সমস্যা অনুমান করে আমি বললাম, ‘এটা কোনো সমস্যাই নয়। আজকাল ছোটো
হলেও দু একটা রেস্টুরেন্ট খুলেছে এখানে। আমি ড্রাইভার কে পাঠিয়ে খাবার
আনিয়ে নেব। তুমিও বরং ফ্রেশ হয়ে চলে এসো, একসঙ্গেই ডিনার করা যাবে’।
‘সেটা না হয় আগামী কাল হবে, স্যার আজ আমার কোয়ার্টারে যা হোক একটু
কিছু খাবেন’।
আমি বললাম, ‘উর্মিলা তুমি এসব ঝামেলা করতে যেওনা’।
‘ঝামেলা কিছুই নয় স্যার। মুচকি হেসে উর্মিলা বলল, ‘ফরেস্ট এ্যাকাডেমিতে
আমার এক বাঙ্গালী বান্ধবী ছিল। সে বলত, স্যার কি যেন একটা প্রবাদ আছে
বাংলায়, যে রান্না করে সে……’
আমি হেসে বললাম, ‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে’।
‘এগজ্যাকটলি। আমার আজ সেই ভূমিকা। কিচেনে গিয়ে নিজেই যা পারি তাই –
‘সে কি, তোমাকে রাঁধতে হবে কেন উর্মিলা, খুব অবাক হয়ে আমি বললাম,
তোমার সেই কাজের মহিলার কি হল’?
‘বেশ কিছুদিন হল ও কাজ ছেড়ে দিয়েছে স্যার। সোনাপাড়া গ্রামে ওর বাপের
বাড়ি। আমার কাছে কাজ করলে ও নাকি বাপের বাড়িতে মুখ দেখাতে পারবেনা’।
বলতে বলতে উর্মিলা মলিন ভাবে হাসল।
আমি তাড়াতাড়ি বললাম, ‘ঠিক আছে, তুমি এগোও, খাবার সময় হলে আমি
তোমার কোয়ার্টারে পৌঁছে যাবো’।
রুমে এসে স্নান সেরে উর্মিলার আদর্শ গ্রামের প্রস্তাব পড়ছিলাম। গ্রামে খুব জলের
কষ্ট। কয়েকটি কূঁয়ো অবিলম্বে সংস্কার করা দরকার। এদের জমি প্রায় ছ’মাস
খালিই পড়ে থাকে। আরও একটি ফসল নিলে ভালো হয়। বিদ্যুৎ এখনো আসেনি।
নেই প্রাইমারি স্কুলও। সব কথাই খুব যত্ন করে গুছিয়ে লিখেছে। এর জন্যে অন্যান্য
যে সরকারি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, কোন কাজে মোটামুটি ভাবে
কত খরচ পড়বে, এ সবই।
কাগজের মাঝখানে একটা অতিরিক্ত কাগজ ছিল বোধহয়, উল্টে পালটে দেখতে
গিয়ে সেটা মাটিতে পড়েছিল। তুলে দেখি ওতে কোনো কম্প্যুটার প্রিন্ট নেই। কালো
কালিতে মুক্তর মত নিটোল হিন্দী অক্ষরে দু’চার লাইন লেখা। চিনতে অসুবিধা
নেই, বেগম আখতারের গাওয়া বহুশ্রুত একটি গজলের একাংশ।
- ‘আপ কহতে থে কে রোনে সে না বদলেঙ্গে নসীব
উম্র ভর আপকী ইস বাত নে রোনে না দিয়া ..’
(তুমিই বলেছিলে একদিন, কাঁদলে কারোর ভাগ্য বদলে যায়না। তোমার এই কথা
শুনে সারা জীবন আমার আর কাঁদাই হলনা।)
বাইরে তুমুল শব্দ শুনে জানলার কাছে এসে দেখি, চরাচর প্লাবিত করে বৃষ্টি
নেমেছে। এবছরের প্রথম বৃষ্টি।
লেখক পরিচিতি: লেখক অবসরপ্রাপ্ত আই এফ এস আধিকারিক এবং ঔপন্যাসিক।

গল্পটি লেখকের সদ্য প্রকাশিত গ্রন্থ 'চেনামুখ' গল্প সংকলনের অংশ। অরণ্য তো বটেই, জীবনের অন্য অঞ্চল থেকেও সংগ্রহ করে আনা উর্মিলার মত আরও অনেক মানুষের কথা নীল মজুমদারের কলমে । বইটি অনলাইনের সংগ্রহ করা যাচ্ছে অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্টে। উৎসাহীদের জন্য বই সংগ্রহের লিঙ্ক:
Comentarios