top of page

গাড়োয়ালের ডায়েরি (পর্ব ৭): আউলি হয়ে কুয়ারি পাসের পথে

  • ..
  • Nov 25, 2023
  • 6 min read

আবার একবার গাড়োয়াল হিমালয়ের গল্প বনেপাহাড়ের পাতায়। ছবিতে ও কলমে সুমন্ত ভট্টাচার্য্য। এবার শুরু কুয়ারি পাস ট্রেকিং এর আখ্যান।




ঠিক ভোর ৪ টায় নন্দাদেবী এক্সপ্রেস ঢুকে গেল হরিদ্বার স্টেশানে। দিল্লী থেকে মাত্র ৪ ঘন্টার যাত্রা। একটু চোখ বুজে নিয়েছিলাম বটে আপার বার্থে শুয়ে। কিছুটা সময় সহযাত্রীদের সাথে আলাপে কেটে গেছিল। একজন যাচ্ছেন সাকরি হয়ে ফুলেরা ট্রেকে ইন্ডিয়াহাইকের সাথে। তিনি দিল্লির বাসিন্দা। আর একজন চাকরির ইন্টারভিউ দিতে বিহার থেকে দেরাদুনে। ট্রেনের কোচই তার সাজঘর। রাতেই দেখলাম জামা কাপড় পরে তৈরি হয়ে নিলেন।

হরিদ্বারে নেমে হাফ জ্যাকেটের ওপর ফুল জ্যাকেট চাপিয়ে নিতেই হল। আর টুপি। পেটে ছুঁচোয় ডন দিচ্ছে। ভেবেছিলাম দিল্লী বিমানবন্দর থেকে হজরত নিজামুদ্দিন স্টেশানে এসে কিছু খেয়ে নেব। বিমানে মাস্ক খুলে খাবার রিস্ক নিইনি। সে গুড়ে বালি। কোন খাবার দোকানই নেই স্টেশানে। অগত্যা সঙ্গে থাকা দু প্যাকেট বিস্কিটে কাজ চালাতে হয়েছে। কতদিন পরে আবার পা দিলাম হরিদ্বারে। সেই ২০১৭র পর নানা কারণে, আর তারপরে করোনার দৌরাত্মে ট্রেকে আসা হয়নি আর। এবারে তাই হঠাৎ করেই ঠিক করে ফেললাম চলো কুয়ারি পাস। সঙ্গে কেউ নেই তো কুছ পরোয়া নেই। হাতে সময়ও কম। খরচটা একটু বাড়বে তো বটেই একা গেলে, তবে ক'বছরের খরা না কাটালেই নয়। স্টেশানের বাইরে রাস্তায় গাড়ি নিয়ে হাজির বীরেন্দর রানা। গাড়িতে উঠতেই চাকা গড়াল হরিদ্বার ছাড়িয়ে হৃষিকেশের দিকে। ছেড়ে চলেছি হর কি পৌড়ি, বিরাট শিবমূর্তি। শেষ রাতের অন্ধকারে জনহীন হরিদ্বারের ঘাটগুলো আলোয় উদ্ভাসিত। বারবার উত্তরাখন্ডে আসার জন্য বড় কাছের, বড় নিজের যেন এইসব জায়গা। কতদিন পর যেন চেনা আত্মীয়র কাছে আসলাম।

বীরেন্দারকে বললাম তাড়তাড়ি কিছু খেতে হবে। কাল বাড়ি থেকে বেরানোর পর প্রায় না খাওয়া। ও বলল, এ সময় তো হৃষিকেশে কিছু পাওয়া খুব মুস্কিল স্যারজি! চা পাওয়া গেলে যেতে পারে।

-বললাম , তাই হোক আপাতত।

খুঁজে পেতে একটা চায়ের দোকান খোলা পাওয়া গেল। গরম চা আর বিস্কিটে শরীরটায় একটু বল পেলাম।

গাড়ি আবার চলতে শুরু করার পর এক জায়গায় একটা ঘাট দেখে থামাতে বললাম। নেমে দেখলাম ওমকারানন্দ ঘাট। সিড়ি বেয়ে নেমে বালির চর। রাতের অন্ধকার ভেদ করে বয়ে চলেছে পতিতপাবনী গঙ্গা। তার স্বচ্ছ সবুজ জল এই অন্ধকারেও প্রতীয়মান। দু'পাশে ঝলমল করছে রামঝুলা আর হৃষিকেশের নতুন ব্রিজের আলো। ওপারের পরমার্থ নিকেতন আশ্রম থেকে ভেসে আসছে ভোরের স্তবগান, মন্ত্রোচ্চারণ আর ঘন্টাধ্বণি। সে এক অপার্থিব অনুভূতি। দেবভূমিতে স্বাগত জানাল চরাচর।

গাড়ি চলতে চলতে ভোরের আলো ফুটল।

ভোরের হৃষিকেশ



এসে গেল ব্যাসি। এখানে সার দিয়ে থাকা খাবর হোটেলগুলো তখন আড়মোড়া ভাঙ্গছে। তার একটায় বসে গেলাম আলু পরোটার প্রতীক্ষায়। পাহাড়ে এলে আমাদের স্টেপল ফুড। একটি বাছুরকে রুটি কিনে খাওয়ালাম। বেচারারা খিদের চোটে আবর্জনা থেকে প্লাস্টিক খাচ্ছে দেখলাম।

এরপর তো সেই চেনা পথ। দেবপ্রয়াগ, শ্রীনগর, রুদ্রপ্রয়াগ হয়ে গাড়ি ছুটল চামোলির দিকে। পার হলাম কর্নপ্রয়াগ, নন্দপ্রয়াগের সঙ্গম। বড় প্রিয় নাম এসব। পিপলকোটি পার হতে রাস্তার ওপর ভেসে উঠল হাতি-ঘোড়ি শৃঙ্গের বিরাট রূপ। রাস্তা চওড়া হচ্ছে পাহাড় কেটে কেটে। কতটা প্রয়োজন , কতটা ক্ষতি করছে এসব হিমালয়ের ভঙ্গুর ভূ-প্রকৃতির তা ভাবতে ভাবতে পাগল-নালা এসে গেল হেলাং এর পর। কোন টেকনলোজি দিয়েই এই স্থানের বারংবার ধ্বসকে আটকানো যায়নি। গাড়ি পার হয় সন্তপর্ণে।

হাতি ঘোড়ি। পিপলকোটি ছাড়িয়ে।

পাগল নালা

যোশীমঠের ভিড় বাজার পার হয়ে পথ ধরা হল আউলির। ক্যান্টনমেন্ট জোনর মধ্যে দিয়ে রাস্তা। রাস্তায় যত এগোচ্ছি তত চোখের সামনে ভেসে উঠছে শৃঙ্গরাজি। আভাস পাচ্ছি কেমন হতে পারে আউলির দৃশ্যপট। রাস্তার দুইদিকে চিরহরিৎ অরণ্য। হেমন্তর ঝড়া পাতায় ছেয়ে আছে পথ।

আউলির পথে

এরপর একটা বাঁক ঘুরে গাড়ি এসে থামল জি এম ভি এন-এর স্কি রিসর্টের সামনে। আমার আগামী দু'দিনের ঠিকানা। ভাল রাস্তার শেষ এখানেই। আপার আউলিতে যেতে হলে মেঠো, ভঙ্গুর রাস্তাই ভরসা গাড়ির।

আউলিতে হোটেলের দর বেশ চড়া। এর মধ্যে স্কি রিসর্টের অবস্থান সুবিধাজনক আর পকেট ফ্রেন্ডলি। ঘর থেকে দেখলাম হাতি ঘোড়ি, নর, বরমলের মত চূড়াগুলো দেখা যাচ্ছে। একটু বিশ্রাম নিয়ে, লাঞ্চ করে একটু গড়ানো গেল। তারপর জানালা দিয়ে দেখলাম রোদের রঙে পাক ধরেছে। তাড়তাড়ি টুপি, জ্যাকেট পরে বার হলাম। রিসর্টের পিছনে হনুমান মন্দিরে যাবার সিঁড়ি উঠতে হবে। সেখান থেকেই দেখা যাবে বাধাহীন দৃশ্য সূর্যাস্তের। যে নন্দাদেবীকে হোটেল থেকে দেখা যাচ্ছিল না, তিনিও এখান থেকে দৃশ্যমান। ভারতীয় হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ! আর তারপরে যা দেখলাম তা বলে বোঝানোও মুস্কিল, ছবিতেও ধরা অসম্ভব।

ঘর থেকে দেখছি বরমল

দিনের শেষ আলো নন্দাদেবী শিখরে

পরদিন ভোরের সূর্যোদয় দেখতেও কাঁপতে কাঁপতে হাজির সেখানে। সূর্যদেব ধীরে ধীরে উঠছেন নন্দাদেবীর আড়াল হতে। কাল সূর্যাস্তের শেষ রশ্মিও ছুঁয়ে গেছিল নন্দাদেবীর চূড়া। তিনিই তো গাড়োয়াল-কুমায়নের ভাগ্যনিয়ন্ত্রা। সূর্যদোয়ের ঠিক আগের মুহূর্তে সৃষ্টি হল এক হীরের আংটির আকাশের কোলে। ছড়িয়ে পড়ল দিবাকরের রশ্মিজাল।

মহাজাগতিক: নন্দাদেবীতে সূর্যোদয়

বাকি দিনটা গেল আউলিতে ঘুরে ফিরে। আজকের দিনটা অ্যাক্লিমাটাইজের জন্য রাখা। স্কি রিসর্টের পিছন থেকেই ছাড়ে চেয়ার লিফট। শূণ্যে বসে বাতাস কেটে উড়ে যাওয়া আপার আউলিতে। সেখানে আছে নন্দাদেবী ইকো হাট, ক্লিফটপ রিসর্ট বা ক্লাউড এন্ডের মত দামি দামি রিসর্ট। ভাবলাম সপরিবারে এলে এখানে বেশ কাটানো যাবে দু'টো দিন।

আউলিতে স্কি-র জন্য নির্মিত কৃত্রিম জলাশয়

আপার আউলির একদম ওপরে যোশীমঠ থেকে এসে নামছে রোপওয়ে, যার নাম গান্ডোলা। পর্যটকরা কেউ কেউ ঘোড়ায় চেপে সেখান থেকে গড়সন বুগিয়াল ঘুরে আসছেন, যে পথে আমার যাবার কথা কাল। নন্দাদবী এখান থেকে নন্দাদেবী ন্যাশানাল পার্কের বিস্তার নিয়ে রাজকীয় মহিমায় বিরাজমান। ছোট ছোট ঝরনা নেমে আসছে আউলিতে তৈরি করা কৃত্রিম হ্রদটির জলে। ঘাসে ঘাসে , ফুলে ফুলে হালকা চালে ঘুরে বেড়ানো আজ এখানেই।


গরসন বুগিয়াল


ট্রেক শুরু হবার আগের রাতে তেমন ভাল ঘুম হল না। নানারকম চিন্তা মাথায় ঘুরতে লাগল। ঠান্ডায় ক্যামেরার ব্যাটারির চার্জ থাকবে কিনা সেটা তো ভাবছিলামই। কিন্তু বেশি যে চিন্তা মাথায় আসছিল তা তিন বছর আগে ধরা পড়া লাম্বার স্লিপ ডিস্কের অসুবিধাটা। সেটার জন্য হাটাচলায় অসুবিধা হবে না তো! যেদিন ব্যাপারটা ধরা পড়েছিল অর্থোপেডিক বন্ধু সুস্মিতকে প্রথম জিজ্ঞাসা ছিল- 'অ্যাঁ! বলিস কি! ট্রেকিং এ যেতে পারব তো!' সে অবশ্য আশ্বাস দিয়ে বলেছিল- 'পারবি পারবি। এখন এই এই গুলো মেনে চল।' সেসময় টানা বিশ দিন বেড রেস্টে থাকার সময় শুয়ে শুয়ে শুধু ট্রেকিং এর বই পড়তাম আর নেট থেকে দেখে ভাবতাম- কিভাবে যাব এই সব জায়গা আর! যদিও রুকস্যাকটা কোন রিস্ক না নিয়ে আমার গাইডের সাথেই থাকবে এবার, তবু আমার পিঠেও একটা মাঝারি বোঝা থাকবে। তার ওপর মাঝে কয়েকবার পরিকল্পনা বানিয়েও বাতিল হয়েছে। ২০১৯ এ নন্দাদেবী আউটার স্যাংচুয়ারির প্ল্যান করার পর ছুটি ম্যানেজ হল না। ২০২০ তে পিন্ডারির তোড়জোড় করতে কোভিড এসে গেল। এইবারেই গত অক্টোবরে মদমহেশ্বর আসার কথা ছিল। ভয়ানক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য তাও বাতিল করেছিলাম। সব নিয়ে নানা চিন্তার দোলচাল...

যোশীমঠ থেকে আসছে রোপওয়ে

আগের দিনই বিকেলে এসে আমার গাইড অঙ্কিত বিস্ত দেখা করে গেছে। বলে গেছে ৭ টার মধ্যে তৈরি থাকতে। এদিকে জি এম ভি এন-র বাবুরা বলছেন অত সকালে ওরা ঘুম থেকেই ওঠেন না। তার ওপর এখন পর্যটক নেই তেমন, আমার একার জন্য কে রান্নাঘর খুলবে! অনেক বলার পর আটটা নাগাদ ব্রেকফাস্ট তৈরি করে দিতে রাজি হলেন।অগত্যা তাই সই। আটটা নাগাদ আলু পরোটা আর টোস্ট দিয়ে পেট ভরিয়ে নিলাম। আজ সারাদিন চলার রসদ জোগাবে। আমার আবার চলার পথে বেশি খাওয়া দাওয়ার চাপ নেওয়া পোষায় না। সব শেষ করে সাড়ে আটটা নাগাদ চলা শুরু হল। জি এম ভি এন এর পিছনেই চেয়ার লিফটের পথের তলা দিয়ে ট্রেকিং পথ শুরু। লোয়ার আউলি থেকে আপার আউলি। বেশ চড়াই সে পথ। প্রথম স্পেলেই ম্যাকগ্রাথ না হলেও জাহির খানের পেসের সামনে। ওই পথ ছাড়িয়ে এসে পড়লাম আপার আউলির একটা চায়ের দোকানে, ক্লিফটপ রিসর্টের সামনে। একটু গরম চা'তে গলা ভিজানো। এখানে বসে অঙ্কিতের সাথে গত মাসের বিপর্যয়ের কথা হচ্ছিল। ও তখন নাকি নন্দাদেবী আউটার স্যাংচুয়ারিতে গিয়ে আটকে পড়েছিল দুর্যোগে। কথায় কথায় জানা গেল কানাকাটা ট্রেকে গিয়ে যারা মারা গেছেন পশ্চিমবঙ্গের, তাদের কযেকজনকে ও চিনত। এরপরে আবার চলা শুরু। এ পথে তো কাল গেছি আপার আউলির শেষ পর্যন্ত। রোপওয়ে টার্মিনাসে গিয়ে দেখি তখন অনেকেই যোশীমঠ থেকে এসে গেছে। ঘোড়ায় চড়ে গরসন অবধি যাচ্ছে কেউ কেউ। এখানে পারমিট দেখিয়ে ঢুকতে হল। প্রথমেই দেওদার বনের মধ্যে দিয়ে পথ গেছে গরসন অবধি। ছায়ায় ঢাকা বনপথ।

বনপথে

ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে হাতি ঘোড়ির চূড়া। বন দিয়ে কিছুক্ষণ যাবার পর এসে পড়ল বনদেবীর মন্দির। উত্তরাখন্ডের সর্বত্র বনদেবতার মন্দির থাকে। শুধু উত্তরাখন্ড কেন সারা ভারতেই বনদেশে তাদের অবস্থান।

বনদেবীর মন্দিরে

স্থানীয় অধিবাসীরা রক্ষাকর্তা হিসাবে তাদের পুজো করেন। প্রকৃতির সাথে মানুষের আন্ত:সম্পর্ক এভাবেই গড়ে উঠেছিল এক সময়ে। এখানে সঙ্গে থাকা কাজুবাদাম কিছুটা উৎসর্গ করা হল মন্দিরে।

বনদেবীর মন্দির ছাড়ানোর পর বনের সমাপ্তি। সামনে দিগন্ত বিস্তৃত ঢেউ খেলানো বুগিয়াল। এই হল গরসন। গরসনের ঘাসের পথে আস্তে আস্তে উঠতে থাকা। এবারে দেখছি পিছন দিকে যে শৃঙ্গগুলো আউলি থেকে ঢাকা পড়েছিল সামনের পাহাড়ে, তারাও ডানা মেলছে। কামেট, নীলকন্ঠ, নারায়ণ পর্বত একে একে মাথা তুলে দাড়াল। আর সামনের দিকে মাথা তুলল দ্রোণাগিরি। বস্তুত: এবার শুরু হল দ্রোণাগিরির রাজত্ব। আউলি অবধি যেমন হাতি ঘোড়িই ছিল মূল পর্বত-শিখর, গোটা কুয়ারি পাস ট্রেকে আকাশ আলো করে থাকে দ্রোণাগিরি শিখরই। সে-ই রাজা এই ট্রেকে।

গড়সনে

নীলগিরি

আমরা ছাড়িয়ে এলাম ঘোড়া আসার সর্বোচ্চ জায়গাটা। সামনে শুধুই নভেম্বারের পাক ধরা সোনালী ঘাসের বুগিয়াল আর নীল আকাশ জুড়ে সাদা সাদা সব পর্বতশৃঙ্গ। মাঝে মাঝে থেমে ছবি নিচ্ছি, আমি আর অঙ্কিত আলোচনা করছি কোনটা কোন শৃঙ্গ। কথায় কথায় এল রাজকুমার খোসলাRaj Kumar Khosla সাহেবের কথাও, যিনি ফেসবুকে দ্য হিমালয়ান ক্লাব গ্রুপে বছরের পর বছর মগ্ন থাকেন উত্তরাখন্ডের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্বতমালার ছবিতে বিভিন্ন শৃঙ্গ চিহ্নিতকরনের কাজে। অঙ্কিত তুলল কুন্থ খাল ট্রেকিং এর কথাও। ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স আবিষ্কার হয়েছিল একসময় যে পথ দিয়ে। তারপর বহুবছর পরিক্তত্য ছিল। এই পথ আবার খোলা হয় কয়েক বছর আগে। সেসময় এই পথে ট্রেক করেন অনির্বান ব্যানার্জী ও শ্রীমতি ব্যানার্জী তাঁদের কন্যাকে নিয়ে। সে অভিজ্ঞতার কথা তাঁরা বিস্তারে লিখেছেন আমার সম্পাদিত 'বনেপাহাড়ে' ওয়েবজিনে (boneypahare.com), যেটা বাংলায় আপাতত একমাত্র পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ বিষয়ক অনলাইন পত্রিকা। অঙ্কিত জানাল, ও কয়েকবার ওই পথে গেছে সম্প্রতি ট্রেকিং দল নিয়ে।

নন্দাদেবীর বিস্তার

উল্টো দিক থেকে একে একে ট্রেকার রা আসছেন। এরা সব ঢাকের দিক থেকে শুরু করেছিলেন। একটা দল বলল, এখন মনে হচ্ছে আসল হাইকিং করছি। এই ক'দিন তো শুধুই উঠছি আর চড়াই ভাঙ্গছি। আমরা ঘাসের ময়দানে চলতে চলতে এসে পৌঁছালাম বুগিয়ালের শেষে। এই বুগিয়াল আরো ওপরে উঠে গেছে। কেউ চাইলে শুধু এই বুগিয়াল এক্সপ্লোর করতেই আসতে পারে। তবে ক্যাম্প করে থাকা যাবে না। বুগিয়ালের শেষে কিছুক্ষণের বিরতি।

দ্রোণাগিরি ও গড়সন বুগিয়াল

চলতে চলতে একটু বিশ্রাম

এখান থেকে দেখা যাচ্ছে নীচে বয়ে চলা ধৌলিগঙ্গা আর তার পাড়ে তপোবন বা তুগাসির মত জায়গা। এই ধৌলিগঙ্গাতেই ২০২১ এর ফেব্রুয়ারিতে প্রবল বানে একটা হাইডেল পাওয়ার প্রজেক্ট ভেসে যায়। এখনও মাটির নীচে চাপা পড়ে আছে অসংখ্য মানুষের দেহ। কেউ শ্রমিক, কেউ অফিসার বা ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন ওই প্রকল্পের। দু:খের হল এই প্রকল্প ছিল রেনি গ্রামের পাশেই, যেখান থেকে শুরু হয়েছিল পরিবেশ রক্ষার চিপকো আন্দোলন। গ্রামবাসীরা এই প্রকল্পের বিরোধিও ছিল। তাও...

এরপর গা ঝাড়া দিয়ে উঠলাম। এবার নেমে যেতে হবে তালি ক্যাম্পের দিকে।

ধৌলিগঙ্গা

(ক্রমশ)



লেখক পরিচিতি: লেখক পেশায় চিকিৎসক। প্রকৃতি ও অরণ্যপ্রেমী। 'বনেপাহাড়ে' ওয়েবজিনের সম্পাদনার দায়িত্বে।

Comments


474525369_1074216644505260_833710345513391369_n.jpg
Royal_Bengal_Tiger_Kanha.JPG

Editor: Dr. Sumanta Bhattacharya
Co-editor: Dr. Oishimaya Sen Nag

  • Facebook

follow our facebook page to stay updated

© 2021 by Boney Pahare. All rights reserved.

bottom of page