top of page

লেখকের দৃষ্টিতে বনে পাহাড়েঃ দুটি অত্যন্ত বিরল গ্রন্থের ইতিবৃত্ত

  • ..
  • 3 days ago
  • 11 min read

ভারতের উত্তর সীমা বরাবরই ছিল দেশ-বিদেশের অভিযাত্রীর, গুপ্তচরের, হানাদারের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। যুগে যুগে মানুষ ছুটে এসেছে এই সীমার ওপারে কী আছে তার খোঁজে। আজ যেমন স্যাটেলাইট অনেক চিত্র তুলে ধরে শতাব্দী আগে তো তা ছিল না। তার খোঁজ দিতেন দু:সাহসী অভিযাত্রীরা। তাদের অভিজ্ঞতা সেচন করে লিখে গেছেন অমর কিছু গ্রন্থ। তা সে যুগেও যেমন বিস্ময় উৎপাদন করেছে, আজও তেমন করে পাঠকের মনে। এমন দুটি গ্রন্থের আলোচনায় রুদ্রজিৎ পাল





“বনে পাহাড়ে” ওয়েবজিন বিগত কয়েক বছর ধরে আমাদের প্রকৃতি সম্পর্কে নানা আশ্চর্য কথাশিল্প উপহার দিয়ে আসছে। কথাশিল্পের মায়ায় প্রকৃতিকে মহিমান্বিত করার ঐতিহ্য বাংলায় বা ভারতে বহু বছর ধরেই রয়েছে। এটা তো ভুললে চলবে না যে, এই বাংলাতেই উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় তাঁর স্বর্ণালী কলমে অসাধারণ কিছু ভ্রমণসাহিত্য রচনা করেছেন। এছাড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেখানেই বেড়াতে গেছেন, সেখান থেকেই চিঠি লিখে লিখে এপিস্টোলারি ভ্রমণকাহিনী রচনা করে গেছেন। নবনীতা দেব সেন বা সমরেশ বসুও ভ্রমণ সাহিত্যে উৎকর্ষের স্বাক্ষর রেখেছেন। পশ্চিমবঙ্গে যে সব লেখক আছেন, তারা প্রত্যেকেই ছোটখাটো বেড়ানোর কথা বই আকারে লিখে যান, সেটা বুদ্ধদেব গুহর ঝাড়খণ্ডের জঙ্গল হোক বা বিমল মুখার্জির “দু চাকায় দুনিয়া”। কিন্তু আজকে এইসব বিখ্যাত লেখক নয়। আমরা আলোচনা করব দুজন স্বল্প-পরিচিত ভ্রমণ লেখকের ভারত বিষয়ক ভ্রমণগ্রন্থ সম্পর্কে। দুটি গ্রন্থেরই বয়স একশো বছরের বেশি। এই দুজনের মধ্যে একজন বাঙালি আর অন্যজন ইংরেজ। কিন্তু বিদেশি হলেও এই দ্বিতীয় ব্যক্তির লেখনীর মূল কেন্দ্র হল সেই ভারতের পাহাড়। এই দুটি গ্রন্থেরই মূল উপজীব্য বিষয় হল পাহাড় এবং অরণ্য, অর্থাৎ এই ওয়েবজিনের কেন্দ্রীয় লক্ষ্য।


প্রথম যে বইটির কথা আলোচনা হবে, সেটা হল “হিমারণ্য”। লেখক রামানন্দ ভারতী। ইনি একদম ঘোর বাঙালি। আসল নাম রামকুমার ভট্টাচার্য। সন্ন্যাস নিয়ে নাম হয়েছিল রামানন্দ ভারতী। এনার আরেকটা পরিচয় আছে। ইনি ছিলেন লীলা মজুমদারের দাদু, মানে মায়ের বাবা। এই রামকুমার ভট্টাচার্য স্ত্রীর মৃত্যুর পর নিজের দুই মেয়েকে রায়চৌধুরী পরিবারের জিম্মায় রেখে সন্ন্যাসী হয়ে হিমালয় যাত্রা করেছিলেন। সেই দুই মেয়ের এক মেয়েকে যত্ন করে বড় করে তুলে উপেন্দ্রকিশোর নিজের ভাইয়ের সাথে বিবাহ দিয়েছিলেন। এই ভাইয়ের নাম প্রমদারঞ্জন রায়। তাঁর কন্যা হলেন লীলা মজুমদার। ১৩০৬ বঙ্গাব্দে, অর্থাৎ, ১৮৯৯—১৯০০ সালে ইনি পায়ে হেঁটে হিমালয় পেরিয়ে তিব্বত যাত্রা করেছিলেন। এবং সেই যাত্রার সুললিত বিবরণ লিখে রেখে গিয়েছিলেন। সেই বইয়ের নামই “হিমারণ্য”। এই বইটি বাংলা সাহিত্যে অনন্য। এখন আই টি সেক্টর থেকে পয়সার স্রোত আসায় প্রচুর বাঙালি পৃথিবীর সমস্ত প্রান্তে রোজ ভ্রমণ করছেন। এবং সেটা নিয়ে ফেসবুক, ইন্সটা ইত্যাদিতে ছবি বা ভিডিও ব্লগের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই রামানন্দ ভারতী সম্পূর্ণ একা পায়ে হেঁটে এই দুর্গম পথে যাত্রা করেছিলেন এবং তার অনবদ্য রোজনামচা লিখেও রেখে গেছেন। এরকম লেখনী সেই সময়ের অনেক ইউরোপীয় অভিযাত্রীদের কাছ থেকে পাওয়া গেলেও ভেতো বাঙ্গালীর কলমে এরকম অভিজ্ঞতার বিবরণ তার আগে বা পরে আর নেই।

এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা বোধহয় উচিত যে সত্যজিৎ রায় নিজের পরিবারের এই অসমসাহসী ঘটনার দ্বারা ভালোভাবেই প্রভাবিত হয়েছিলেন। বাঙ্গালীদের তিব্বত ভ্রমণ তাই ওনার কলমে বারবার ঘুরে এসেছে। মনে পড়ে, “বাক্স রহস্য” গল্পে যে ম্যানুস্ক্রিপ্ট নিয়ে এত কাণ্ড, সেই ম্যানুস্ক্রিপ্ট ছিল একজন বাঙালি লেখকের তিব্বত ভ্রমণের অপ্রকাশিত বিবরণ? এরকম একটা লেখা যে একজন বাঙালির কলমে থাকতে পারে, সেই কল্পনা সত্যজিৎ রায় নিশ্চয়ই পেয়েছিলেন নিজের পরিবারের সাথে সম্পর্কিত এরকম একজন সত্যিকারের জাঁদরেল অভিযাত্রী এবং লেখকের কথা থেকেই। এছাড়াও উনি আবার লিখেছেন “একশৃঙ্গ অভিযান”, যেখানে প্রোফেসর শঙ্কুকে উনি তিব্বতে নিয়ে গেছেন। একটু মন দিয়ে খুঁজলে মনে হয় সেই “একশৃঙ্গ অভিযান” গল্পের বর্ণনার সাথে এই “হিমারণ্য” বইয়ের অনেক আসল জায়গার মিল খুঁজে পাওয়া যেতেও পারে। যাই হোক, এই “হিমারণ্য” বইতে সেই একশো পঁচিশ আগের হিমালয়ের বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্র এবং তিব্বতের অপূর্ব বর্ণনা রয়েছে। উনি যাত্রা শুরু করেছিলেন যোশীমঠ থেকে। আধুনিক পাঠক ভ্রমণ করার সময় অনলাইনে টিকিট, শেয়ার ক্যাব, স্লিপার বাস ইত্যাদিতে অভ্যস্ত। কিন্তু এই বই পড়তে গেলে প্রথমেই লাগবে ধাক্কা। ভ্রমণের পুরোটাই পায়ে হেঁটে!! এবং সেই যাত্রা একদম তুষারমণ্ডিত পাহাড়ের গিরিবর্ত্ম পেরিয়ে। সুতরাং এই বই পড়তে খুব ভালো লাগলেও আধুনিক বাঙালি কেউ যে এই বইয়ের বর্ণনা দেখে সেই পথে যাত্রা করবেন, সেই সম্ভাবনা নেই। শুধু পায়ে হেঁটে তো নয়, তার সাথে রয়েছে চরম শীত, খাদ্যের অভাব এবং নানা প্রাকৃতিক এবং মনুষ্যকৃত বিপদের ভয়। কিন্তু বিপদ যেমন ছিল, আবার আনন্দও ছিল। এই বইতে লেখা আছে কিভাবে হিন্দু সাধুরা সেই যাত্রাপথে নানা অচেনা লোকের বাড়িতে সাদর অভ্যর্থনা পেতেন। সেই আতিথেয়তা এখন আর নেই। এখন গেলে হোম স্টে বুক করতে হবে। পথের প্রত্যেকটা গ্রামের নাম, সেখানকার লোকের জীবনযাত্রার বর্ণনা এবং সেই গ্রামের দেবতাদের বিবরণ ছবির মত দেওয়া রয়েছে। এছাড়া পথের নানা তীর্থের কথা তো আছেই। যেমন তপোবন, ভবিষ্য বদ্রীনারায়ণ, গন্ধমাদন পর্বত বা পথের নানা গ্রামে ছড়ানো পঞ্চপাণ্ডবের মন্দির। হিন্দু এবং বৌদ্ধ—দু রকম সমাজের বর্ণনাই রয়েছে। তবে আসল বৈশিষ্ট্য হল, স্পিরিচুয়ালিটির কথা ছাড়াও সেই হিমালয়ের মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিস্তৃত বিবরণ। এই বইটা যদি কেউ উনবিংশ শতকের হিমালয়ের পার্বত্য সমাজের রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করে, তাহলেও কিন্তু থীসিসের জন্য প্রচুর তথ্য পেয়ে যাবেন। সেই সময়ে, যখন ভক্তিরসে গদ্গদ বর্ণনারই প্রাধান্য ছিল, তখন এরকম অব্জেক্টিভ বিবরণ লিখে যাওয়া অভূতপূর্ব। যেমন, সেই সীমান্তবর্তী অঞ্চলের গ্রামের লোকেদের পণ্য নিয়ে তিব্বতে বাণিজ্যে যাওয়ার বর্ণনা। উল্টো দিকে তিব্বতের লোকেরাও দিল্লি অবধি নেমে আসত কম্বল, চামর, মৃগনাভি ইত্যাদি বিক্রি করতে। সেইসব বাণিজ্যদলের মানুষদের বিশদ বিবরণ রয়েছে এখানে।

লেখক কিছুটা বিপদেও পড়েছিলেন। ইংরেজ কলোনির প্রজা হিসাবে যেমন সুবিধা ছিল, তেমন

কিছু অবাঞ্ছিত ঝামেলাও ছিল। কারণ ছিল ইংরেজদের একটা শয়তানি। ব্রিটিশদের কাজই ছিল

নিজেদের এম্পায়ার ছড়িয়ে দেওয়া। ফলে, ভারত দখল করে তো এরা আর থেমে থাকেনি।

সবসময় চেষ্টা থাকত ভারতের সীমানার বাইরে কিভাবে ব্রিটিশ পতাকা পুঁতে দেওয়া যায়।

আফগানিস্থান, নেপাল, মায়ানমার ইত্যাদি দেশের দিকেও তারা পা বাড়িয়েছিল। এর জন্য

ব্রিটিশদের অস্ত্র ছিল অত্যন্ত দেশভক্ত এবং বুদ্ধিমান কিছু ইংরেজ, যারা নিজেদের সাম্রাজ্যের উন্নতির জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করতে বা অসীম বিপদের মধ্যে পা বাড়াতেও দুবার ভাবত না। সেইরকম সেই বিংশ শতকের শুরুতে ইংরেজ লাল কোটের নজর পড়েছিল তিব্বতের ওপর। ইংরেজ সরকার ছদ্মবেশে তিব্বতে চর পাঠানো শুরু করেছিল সেখানকার ম্যাপ বানিয়ে বা সেখানকার লোকের হাল হকিকত জেনে ভূখণ্ডটা কব্জা করার রাস্তা প্রশস্ত করতে। কিন্তু যখন রামানন্দ ভারতী মশাই এই যাত্রা করেন, তখন তিব্বতের বৌদ্ধ শাসকেরা সেই কথা জেনে ফেলেছিল। ভারতের অধিবাসী মানেই তখন তাদের কাছে ইংরেজের গুপ্তচর। ফলে ভারতীয় হিন্দু সাধুদের কৈলাস ভ্রমণের ওপর নানা সন্দেহের কালো মেঘ নেমে এসেছিল এবং নানা বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছিল। এই লেখক সেই সব ঝামেলা এবং সেগুলো থেকে রেহাই পাওয়ার কৌশলের দারুণ বর্ণনা দিয়েছেন। সন্ন্যাসীদের জামিনদার ছাড়া কৈলাস ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হত না। এই লেখক সেরকম এক পার্বত্য গ্রামের মোড়লকে জামিনদার হিসাবে জোগাড় করেছিলেন। সেই মোড়ল এক নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বর্ণের জামিনদার হয়ে রামানন্দ ভারতীকে তিব্বতে ঢুকতে দিয়েছিলেন। এছাড়া তিব্বতে প্রবেশের পরেও অনেক জায়গায় যেতেই সেখানকার লোকাল রাজার অনুমতি নিতে হত। সেইসব বর্ণনাও রয়েছে।

রামানন্দ ভারতীর লেখনী সত্যিই জাদুময়। একটা উদাহরণ দিলে বুঝতে পারবেন আপনারা। এক পাহাড়ি পথের বর্ণনায় উনি বলছেন---"এই স্থানের প্রাকৃতিক দৃশ্য কবিকল্পনার অতীত। চারদিকে হিমালয়ের অত্যুচ্চ তুষারধবল শৃঙ্গমালা স্তম্ভস্বরূপ বিরাজমান; ওপরে নীল আকাশের নীল চন্দ্রাতপ, যেন পরিশ্রান্ত পথিকদিগের বিশ্রামের জন্য সজ্জিত হইয়া রহিয়াছে। নির্ম ও প্রশস্ত প্রস্তরগুলি যেন মণ্ডপমধ্যস্থ আসনরূপে কল্পিত হইয়াছে; অদূরে গিরিনদী স্নিগ্ধ মধুর ধ্বনিতে পরিশ্রান্ত পথিকদিগের কুশল জিজ্ঞাসা করিতেছে; ……”

হিমালয় বা তিব্বতের এরকম অজস্র বর্ণনা রয়েছে। আরেকটা দেখা যাক—

“প্রথম কৈলাসের দৃশ্য অতি সুন্দর বলিয়া বোধ হইল। চতুর্দিকে বরফময় প্রাচীরে বেষ্টিত, মধ্যে

অভ্রভেদী বরফময় উচ্চ শিখর; শিখরদেশ রবির ছায়াপাতে স্বর্ণশৃঙ্গ বলিয়া প্রতীয়মান হইতেছে।"

পাহাড়ি গ্রামের সমাজের রীতিনীতির বর্ণনায় লেখক বলছেন— “ইহারা স্ত্রী পুরুষে মদ্যপান করিয়া থাকে। এজাতির মধ্যে অবরোধপ্রথা নেই, বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ আছে, বিবাহাদি কার্‍্য হিন্দুপদ্ধতি অনুসারে সম্পন্ন হইয়া থাকে……সমাজে ইহাদের কোনপ্রকার শাসন নাই। ইহাদের মধ্যে বিধবাবিবাহ আছে। ………ইহারা বৎসরান্তে একবার বস্ত্র পরিবর্তন করে।"

এছাড়াও সেইসব সমাজের জাতিভেদ প্রথা, পুজোপদ্ধতি, পশুবলিদান ইত্যাদি নিয়েও অনেক কথা

বলা আছে। এমনকি এদের যৌনজীবন নিয়েও বেশ অকপট বর্ণনা আছে, যেটা সেই ভিক্টোরীয় বাঙালি সমাজে একদম আশাই করা যায় না। আর তখনই বা বলি কেন, এখনও কি বাংলা ভ্রমণ সাহিত্যে কোনও দেশের যৌনজীবন নিয়ে খোলামেলা আলোচনা দেখা যায়? সবই তো সেই হিন্দি সিনেমায় অন্তরঙ্গ সময়ে ফুলের বা পাখির ছবি দিয়ে ঢেকে দেওয়ার মতো।

এই পাহাড়ি পথে ভারবাহী পশুর প্রচণ্ড চাহিদা। এই পথে লেখক এক ধরণের পশু দেখেছিলেন যাদের স্থানীয় ভাষায় বলা হত “ঝব্বু”। তিব্বতের চমরী গাই ও ভারতীয় গাভীর মধ্যে ক্রস ব্রিডিং করে এই পশুর উৎপত্তি। এই প্রাণীই এখানে বণিকদের মালপত্র সব বহন করত।

বইটার অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে নানা মঠের বর্ণনা। সেইসব মঠে লেখক কী কী দেবতাদের মূর্তি দেখেছেন, কী কী পুঁথি দেখেছেন, কী ধরণের ধর্ম নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সেগুলো বিশদে বলা আছে। যেমন, ত্রেতাপুরী নামক এক স্থানে উনি কালীমন্দির দেখেছিলেন। একটি মূর্তির সামনে তিনটি নরকপাল ছিল। উনি শুনেছিলেন যে সিদ্ধযোগীদের মৃত্যুর পর অনেক সময়ে তাদের দেহ থেকে এরকম নরকপাল প্রস্তুত করে মন্দিরে রাখা থাকে। আবার কোনও মঠের প্রধান লামার মৃত্যু হলে অন্য কেউ সেই স্থান অধিকার করতে পারেন না। বিশ্বাস যে, সেই লামা আবার নাকি পুনর্জন্ম গ্রহণ করবেন। তারপর সেই শিশু নিজেই বাড়িতে জানাবে যে সে সেই মঠের লামা ছিল। তখন সেই শিশুকে নানা প্রশ্ন করে অন্যরা আগে নিশ্চিত হবে যে, সেই শিশুর সত্যিই পূর্বজন্মের কথা মনে আছে কিনা। যদি কিছু গোপন প্রশ্নের সঠিক উত্তর সে দিতে পারে, তখন তাকে নিয়ে এসে সেই মঠের লামা করা হবে। লেখক এরকম একজন লামার সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন যিনি পূর্বজন্মের সব কথা বলতে পারতেন।

এরকম অজস্র চিত্তাকর্ষক বর্ণনা রয়েছে। এই পথে শুধু যে হিমালয়ের শোভা বা স্পিরিচুয়াল অনুভূতি লাভ হত তা কিন্তু নয়। এর সাথে ছিল প্রচুর ডাকাতের ভয়। লেখক পথে বেশ কয়েকবার ডাকাতের হাতেও পড়েছিলেন। তবে সৌভাগ্যবশত ওনার কোনও শারীরিক ক্ষতি হয়নি। তবে একবার অন্তত ডাকাতের ভয়ে বরফের মধ্যে ভালোই দৌড় লাগাতে হয়েছিল।

অবশেষে আষাঢ় মাসের সংক্রান্তির দিন লেখক মানস সরোবরে স্নান করে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। যা এখানে বললাম, তার একশো গুণ বেশি সুন্দর বর্ণনা বইতে রয়েছে। নিজে না পড়লে এই বইয়ের স্বাদ বোঝা যাবে না। তিব্বত কিন্তু চিরকালই নিষিদ্ধ রাজ্য। খুব বেশি বাইরের লোক এখানে ঢুকতে পারেনি। সুইডেনের স্বেন হেদিন ঠিক যে সময়ে মধ্য এশিয়া এবং তিব্বতের ম্যাপ আঁকার জন্য অভিযান করছিলেন, সেই সময়েই এই বাঙালি সাধুও সেই জায়গায় অভিযান করে ম্যাপ না হলেও, সেখানকার অ্যানথ্রপলজির বর্ণনা দিচ্ছিলেন, সেটা কিন্তু কম কথা নয়। আর গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো সব অভিযানের বর্ণনা--- পাহাড়ে এমন শীত যে রাতে ঘুম আসে না; আগুন জ্বেলে সারারাত বসে থাকতে হয়। বা, পাহাড়ি পথে কোনও গুহায় অচেনা লোকেদের সাথে রাত কাটানো। কিংবা, নেপাল সীমান্তে খুজ্রুনাথ মন্দিরে রাম সীতা দর্শন করা। বা কোনও অচেনা মঠে একশো ষাট বছর বয়সী লামার সাক্ষাৎ পাওয়া। এইসব কাহিনীর আর দ্বিতীয় হয় না। যদি এটা আমেরিকা হত, তাহলে এই বই নিয়ে এতদিনে দশটা ডকুমেন্টারি ফিল্ম তৈরি হয়ে যেত। আমাদের দেশে এই বই সবার অজান্তে উইপোকার খাদ্য হয়।


এবার আসি দ্বিতীয় বইয়ের কথায়। এই বইয়ের নাম—“ওয়ান্ডারস অফ দা হিমালয়”। লেখক স্যার ফ্র্যান্সিস ইওংহাসব্যান্ড। প্রকাশকাল—১৯২৪। মানে ঠিক একশো বছর আগে। প্রকাশক লন্ডনের জন মারে। অবশ্য এখন কপিরাইট বেরিয়ে যাওয়ার পর কিছু ভারতীয় প্রকাশক এই বই প্রকাশ করেছেন। ফ্রান্সিস হিমালয়ে ঘুরেছিলেন ১৮৮৪ সালে। সুতরাং, উনি বই লিখেছেন অনেক বেশি বয়সে। কিন্তু তাও, এই বই “ক্লাসিক”।



আগের বইয়ের সাথে এই বইয়ের প্রথম পার্থক্য হল, এটা তীর্থযাত্রার বর্ণনা নয়। এটা একজন তরুণ ইউরোপীয় মিলিটারিম্যানের প্রাচ্য ভ্রমণ। এবং এনার উদ্দেশ্য নিজের আত্মাকে খুঁজে পাওয়া নয়। বরং ব্রিটিশ মিলিটারির সাহায্যার্থে নতুন পথ, নতুন মিলিটারি যাওয়ার রাস্তা খুঁজে বার করা। এদের চোখ স্বর্গে নয়, বরং হিমালয় পেরিয়ে নতুন দেশের দিকে। তাহলে, আসুন, একটু দেখা যাক যে এই ইংরেজ তনয়ের চোখে হিমালয় কেমন। বইয়ের একদম শুরুতেই রয়েছে –“আমাদের হিমালয়ের রহস্য ভেদ করতে হবে।“ অর্থাৎ, এই লেখকের কাছে হিমালয় হল এক রহস্যময় জগত, যে বহু অজানা সম্পদ এবং প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে। এই মনোভাবটা অনেকটা আফ্রিকার জঙ্গল সম্পর্কে ইউরোপীয় কলোনিস্টদের যে ভাবনা ছিল, সেইরকম।

পার্থক্য আরেকটা ছিল। এই ফ্রান্সিস হিমালয়ে ভ্রমণ শুরু করেছিলেন মাত্র কুড়ি বছর বয়সে! উনি তখন রাওয়ালপিণ্ডিতে মিলিটারি অফিসার। সেই সময়ে এপ্রিলে আড়াই মাসের বাৎসরিক ছুটি পেয়ে উনি একা একা হিমালয়ে এক্সপ্লোরেশান শুরু করেন। এই জিনিস তো আর বাঙালিদের দিয়ে হবে না। কুড়ি বছর বয়সে বিদেশে সেনাবাহিনীর অংশ হয়ে কাজ করবে, এরকম বাঙালিই পাওয়া যায় না। তার পরে সেখান থেকে ছুটি পেলে বাঙালিরা মানে মানে বাড়ি ফিরে এসে লুচি মাংস খাবে। পৃথিবী ঘুরে দেখতে বেরোতে পারবে না। সুতরাং এইরকম বই একমাত্র একজন ইংরেজের পক্ষেই লেখা সম্ভব কারণ সেই বয়সে সেরকম অভিযান করার বুকের পাটা ওদের মধ্যেই আছে।


সঙ্গে কিছু টাকা আর একটা বন্দুক নিয়ে ফ্রান্সিস ইয়ংহাসব্যান্ড ধর্মশালায় পৌঁছে গেলেন। সেই সময়ে ইংরেজরা ছুটিতে পাহাড়ে গেলেই শিকারের কথা ভাবত। গেম হান্টিং ছিল এক ধরণের “স্পোর্ট”। কিন্তু, ফ্রান্সিস শুরুতেই বলে দিয়েছেন যে মিলিটারির অংশ হিসাবে বন্দুক চালানোর দক্ষতা থাকলেও শিকার ওনার ভালো লাগত না। উনি প্রকৃতি খুঁজে বার করতেই বেশি উৎসাহী ছিলেন। সুতরাং, উনবিংশ শতকের একজন ইংরেজের লেখা বই হলেও এই ভ্রমণকাহিনীতে শিকারের বর্ণনা খুব একটা নেই। একজন ইংরেজ সেই সময়ে ভারতে যেভাবে থাকত, ফ্রান্সিসও সেভাবেই ছিলেন। ডাকবাংলোয় মুরগীর রোস্ট, পথে দেরি হয়ে যাওয়া এবং পাহাড়ের মধ্যে প্রচুর প্রাচীন গোষ্ঠীর মানুষের সাথে পরিচয়। এখানে বাঙালি এবং ইংরেজের মনোভাবের পার্থক্য বোঝা যাবে। আগের যে বইটার কথা বললাম, সেখানে লেখক পাহাড়ি গ্রাম এবং তার অধিবাসীদের জীবনের বর্ণনা দিয়েছেন অনেক সময়েই নেগেটিভ দৃষ্টিতে। তাদের আচার বা জীবনযাপন অনেক সময়েই একজন ভদ্র বাঙালির দৃষ্টিতে নিন্দনীয়। এদিকে তাদের সাহায্য ছাড়া সেই দুর্গম তিব্বত যাত্রা সম্ভব নয়। পদে পদে তাদের ওপরেই ভরসা করে তীর্থ ভ্রমণ। কিন্তু তাও, তাদের প্রতি একটা তির্যক মনোভাব। কিন্তু অন্যদিকে, এই ইংরেজ তনয়, যিনি ভারতে রয়েছেন শাসক গোষ্ঠীর প্রতিনিধি রূপে, তার কিন্তু ভারতের পার্বত্য মানুষ সম্পর্কে মনোভাব অনেক বেশি পজিটিভ। হিমালয়ের পাদদেশে থাকা প্রাচীন রাজপুত জাতের লোকেদের প্রশংসা রয়েছে, মুসলিম অধিবাসীদের প্রশংসা রয়েছে। আবার সেই সাথে আজকের হিমাচল প্রদেশের “বৈজনাথ” মন্দিরের সপ্রশংস বর্ণনাও রয়েছে। মাত্র কুড়ি বছর বয়স হলেও উনি কিন্তু হিমালয়ের বুকে চলতে চলতে কিছুটা আধ্যাত্মিক চেতনার মুখোমুখি হয়েছেন। হাজার হাজার বছর ধরে যে ভারতের অধিবাসীরা হিমালয়ে অতীন্দ্রিয় চেতনার সন্ধান পেয়েছেন, সেই বর্ণনাও বেশ কয়েক পাতা জুড়ে রয়েছে। যদিও, আমার ব্যক্তিগত ভাবে ভ্রমণ কাহিনীর মধ্যে এরকম স্পিরিচুয়াল কথা বেশি হলে একঘেয়ে লাগে। আগের বইটার মত এই বইতেও যাদের বিবরণ অনেক পাতা জুড়ে রয়েছে, তারা হল বণিক। হিমালয় যে শুধু তীর্থের আশ্রয় নয়, বরং হাজার হাজার বছর ধরে এশিয়ার বাণিজ্যের কেন্দ্র, সেটা কিন্তু এই বই পড়লেই বোঝা যায়। হিমালয়ের পথে পথে শুধু তীর্থযাত্রী নয়, প্রচুর ব্যবসায়ীও আনাগোনা করতেন। তারাই উত্তর থেকে দক্ষিণে এশিয়ার অর্থনীতি সচল রাখতেন।

ফ্রান্সিস কাংরা কুলু উপত্যকায় রডোডেন্ড্রন ফুলের বর্ণনা যেমন দিয়েছেন, তেমন পাইন গাছের বনের কথাও বলেছেন। আবার এই বই উনি লিখেছিলেন ওনার হিমালয় অভিযানের তিরিশ বছর পরে। তখনও ওনার কাছে সেই সময়ে কুলু থেকে কেনা একটি শাল ছিল। সেই শাল উনি পরম যত্নে ইংল্যান্ডের বাড়ির আলমারিতে রেখে দিয়েছিলেন, সেই কথাও বলেছেন। ফ্রান্সিস রাত্রিবাস করতেন কোনও না কোনও ইউরোপিয়ান ব্যক্তির বাড়িতে। সেটা হতে পারে কোনও টি -প্ল্যানটার, যিনি পাহাড়ের বুকে নিজের চায়ের ক্ষেত তৈরি করে সেখানেই জীবন কাটাচ্ছেন। আবার হতে পারে কোনও ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার, যিনি সস্ত্রীক সেই পাহাড়ের কোনও এক জায়গায় থেকে সেই শহর গড়ে তুলেছেন। এই দুটো বইয়ের লেখকের যাত্রার দর্শনের মধ্যেও পার্থক্য আছে। বাঙালি লেখকের ভ্রমণকাহিনীতে হিমালয় পর্বত হল—ডেস্টিনি এন্ড ডেস্টিনেশান। মানে, হিমালয়ের কোলে পৌঁছে গেলেই জীবন ধন্য। তার পরে আর কিছু নেই। আত্মার সর্বোচ্চ সিদ্ধিলাভ সেখানেই। কিন্তু ইংরেজের লেখা বইয়ে হিমালয়ের সৌন্দর্য, অনন্যসাধারণ আকর্ষণ ইত্যাদি থাকলেও তাঁর লক্ষ্য হিমালয় পেরিয়ে মধ্য এশিয়ায় যাওয়া। সেখানকার তুর্কীস্তান এলাকায় পৌছনো। এই তুর্কীস্তান শব্দটি শুনলে এখন পাঠক কিছুই বুঝতে পারবেন না। এককালে হিমালয়ের উত্তরে মধ্য এশিয়ার বিস্তীর্ণ মালভূমি এবং সমতলভূমি এলাকা, যেখানে ইসলাম ধর্মাবলম্বী যাযাবর জাতির লোক বাস করত, সেই এলাকাকে বলা হত তুর্কীস্তান। এটা এখন মূলত চীনের উইঘুর এলাকায় চলে গেছে। আর কিছুটা গেছে তাজিকিস্তানে। এইখানে একটা প্রধান শহর ছিল ইয়ারখণ্ড। তার কথাও এই ভ্রমণকাহিনীতে রয়েছে।

ফ্রান্সিস ইয়ংহাসব্যান্ড এই যে যাত্রা করেছিলেন, তার লোক দেখানো উদ্দেশ্য তরুণ বয়সের ভ্রমণ হলেও আসল মিলিটারি উদ্দেশ্য ছিল মধ্য এশিয়ায় গিয়ে সেখানে রাশিয়ার শক্তি খতিয়ে দেখা। ব্রিটিশরা ভারত দখল করলেও তাদের একটা ভয় ছিল যে রাশিয়া যে কোনদিন এই কলোনি আক্রমণ করতেই পারে। ফলে, এরকম তরুণ মিলিটারি অফিসারদের তাঁরা মাঝে মাঝেই এক্সপিডিশানের নামে ওই এলাকায় পাঠাতেন। এই ফ্রান্সিস ১৯০৪ সালে আবার ব্রিটিশ ডেলিগেশান নিয়ে তিব্বত গিয়েছিলেন। এবং এইসব কাজের জন্যই উনি “স্যার” উপাধি পান। সুতরাং এই বইয়ে আপাতদৃষ্টিতে ভ্রমণ কাহিনী থাকলেও একটু তলিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে যে, একজন তীক্ষ্ণদৃষ্টি গুপ্তচরের নজর সেখানে রয়েছে। সেজন্যই এই বইতে নানা পাহাড়ি গিরিবর্ত্ম, রাস্তা, মানুষ চলাচলের পদ্ধতি ইত্যাদি নিয়ে এত কথা রয়েছে। যাই হোক, সেই সব কলোনিয়াল এস্পিওনেজ এবং কাউন্টার এস্পিওনেজের দিন এখন আর নেই। আজকে আমরা এই বইটা তখনকার হিমালয়ের স্থিরচিত্র হিসাবে উপভোগ করতেই পারি। যেমন ধরুন, ফ্রান্সিস কাশ্মীর সম্পর্কে বলছেন যে, সেই ১৮৮৪ সালে দিল্লি থেকে রাস্তা কিছুই ছিল না। যাতায়াতের জন্য কখনও ঝিলম নদীতে নৌকা পার, কখনও পায়ে হেঁটে। আবার কখনও এক্কা চড়ে পাহাড়ি পথে। আজকের ভারত-পাকিস্তানের “ফ্ল্যাশ পয়েন্ট” যে জায়গা গুলো, সেগুলো তখন ছিল অজানা পাহাড়ি উপত্যকা। যেমন বারামুলা, উরি ইত্যাদি। সেগুলো উনি চলার পথে পেরিয়ে এসেছিলেন। কাশ্মীরের উপত্যকার সবুজের পিছনেই বরফশোভিত উঁচু পর্বতশিখর দেখে ফ্রান্সিসের লম্বার্ডিতে সবুজ উপত্যকার প্রেক্ষাপটে আল্পস পর্বতের কথা মনে পড়ে গেছে। আবার কাশ্মীরে গিয়ে লাদাখের রাজ্যপাল, এক কাশ্মীরী পণ্ডিতের সাথেও ওনার পরিচয় হয়েছিল। তাঁর নাম ছিল রাধাকিষেন কাউল। উনি ফ্রান্সিসকে পোলো খেলায় নিমন্ত্রণ করেছিলেন। এই পণ্ডিতের আচার ব্যবহার দেখে ফ্রান্সিস মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। এমনকি উনি বলেছেন যে এরকম একজন সভ্য এবং ভদ্র মানুষ দেখে নিজেকে একজন ইংরেজ হিসাবে ওনার অত্যন্ত অভদ্র এবং আনকুথ মনে হয়েছিল!



এই বইয়ের শেষ অংশে ফ্রান্সিসের মিলিটারি জীবনের কিছু কথাও আছে। হিমালয়ে শুধু যে উনি ঘুরতেই গিয়েছিলেন তা নয়। পরবর্তীকালে হিমালয়ে ওনাদের ক্যাম্প ছিল। এবং সেটা ছিল বর্ষাকালে। ফলে সেই হিমালয়ের বর্ষায় ওনাদের ক্যাম্প প্রায় ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। সেই ঝড় বৃষ্টির মধ্যে তাঁরা ক্যাম্প রক্ষা করতেন। আবার তার মধ্যেই দেখা দিয়েছিল কলেরা। লেখক নিজেও আক্রান্ত হয়েছিলেন, কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন। নইলে এই বই তো লেখাই হত না!!

ফ্রান্সিসের বইতে মিলিটারি মননের পরিচয় থাকলেও কবিত্ব কিন্তু কম নেই। হিমালয়ের পথে পথে ঘুরে বার বার তিনি ভাবের জগতে চলে গেছেন। মূল উদ্দেশ্য সরকারি গুপ্তচরবৃত্তি হলেও পথের

রঙ রূপ কিন্তু তিনি অস্বীকার করেন নি। সেই বর্ণনার কথা আর বলব না। এবার পাঠক নিজে পড়ে দেখুন।


লেখক পরিচিতি: ডা: রুদ্রজিৎ পাল একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও লেখক।









 


1 Comment


Guest
a day ago

দ্বিতীয় বই টির রিভিউ বেশি ভালো লাগলো। ইংরেজ রা জাত প্রকৃতি প্রেমিক ছিলেন,সেটাই আমরা তাদের বিভিন্ন বর্ণনায় দেখতে পাই। আরেকটা কথা সেই সময় ইংরেজ রা কর্মচারী হিসেবে মুসলিম দের বেশ পছন্দ করত।তার একটা কারণ ছিল হিন্দুদের প্রচণ্ড ছোঁয়া ছুইর সমস্যা। হিন্দু হলেও একই কাস্ট না হলে তাদের হাতের জল খাদ্য স্পর্শ করত না।এমনকি একসাথে খেতেও বসতো না। সিম্পসন এর স্পোর্টস ইন ইস্টার্ন বেঙ্গল বই এ এইরকম বর্ণনা আমি পেয়েছি।

Edited
Like
86060474-00b1-415d-8c11-9c4471c9c5e7.png
Royal_Bengal_Tiger_Kanha.JPG

Editor: Dr. Sumanta Bhattacharya
Co-editor: Dr. Oishimaya Sen Nag

  • Facebook

follow our facebook page to stay updated

© 2021 by Boney Pahare. All rights reserved.

bottom of page