পৃথিবীর মাটির নীচে অন্য এক পৃথিবী। সেখানে ধরা রয়েছে প্রাচীন যুগের বিচিত্র জীবভান্ডার, হারিয়ে ফেলা জিনগত ভান্ডার। কিন্তু চটজলদি ইনস্টা, রীলের নেশায় মানুষ উজাড় করে ফেলতে চাইছে প্রকৃতির বুকে বেঁচে থাকা এই বিরল জীবজগৎকে। লিখছেন রুদ্রজিৎ পাল।

অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে দুজন কলেজ ছাত্র। লাইনটা আর একটু তাড়াতাড়ি এগোলেই ওরা
নামতে পারবে এই শাওজাই তিংকিং-এ। তিংকিং, অর্থাৎ স্বর্গের প্রবেশপথ। চীনের পশ্চিমে,
গুয়াংজি এবং আরও কিছু প্রদেশের পাহাড় পর্বতের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু স্বর্গের সিঁড়ি।
বিজ্ঞানের ভাষায় সিঙ্কহোল (sinkhole) । মাটির বহু নীচ দিয়ে বয়ে যাওয়া কোনও নদী হাজার
হাজার বছর ধরে ভূপৃষ্ঠের লোয়েস (Loess) বা কার্বোনাইট জাতীয় ভূমিতে ক্ষয় সৃষ্টি করতে
করতে একসময় সেই উপরিভাগের মাটি পুরো ধ্বসে যায়। সৃষ্টি হয় এক পাতালস্পর্শী গহ্বরের।
কিন্তু এই গহ্বর ছোটখাটো গর্ত নয়, বিশাল এলাকা জুড়ে থাকা এক দানবীয় খাত। যেন নীচের
মাটি সরে গিয়ে ভূতলের একটা পুরো এলাকা লিফটে করে কেউ একশো তলা পাতালের মধ্যে
নামিয়ে দিয়েছে। এবং সেটা আজকে হয়নি, হয়েছে কয়েক লক্ষ বছর আগে।
অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাথে চীন নানাভাবে পর্যটক আকর্ষণ করার উপায় খুঁজছে। চীনের
প্রাচীর তো পুরনো হয়ে গেছে। মোটামুটি যাদের সামর্থ্য আছে, সবাই চীনের প্রাচীর ঘুরে
নিয়েছে। আর এখন যাদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা শুধু ঘুরে বেরিয়েই সন্তুষ্ট নন। তাদের চাই
একটা “এক্সপেরিয়েন্স”। এর জন্য টাকাটা কোনও বাধা নয়। তাহলে নতুন যুগের, বিশেষত
তরুণ তরুণী অভিযাত্রীদের আকর্ষণ করার জন্য চীনের চাই নতুন কিছু। সেখান থেকেই
আবিষ্কার হয়েছে এইসব সিঙ্কহোল। সারা পৃথিবীতে রয়েছে প্রায় ৩০০ এরকম সিঙ্কহোল। তার
মধ্যে দুই তৃতীয়াংশই চিনে। গুয়াংজি, ফেংজি ইত্যাদি এলাকায় এরকম বিশাল পাতালগহ্বর
অনেকগুলোই রয়েছে। আমাদের এই প্রবন্ধের শুরুতে যে কলেজ ছাত্রদের কথা বললাম, সেরকম
বহু ছাত্র পর্যটনের নেশায় ছুটে যাচ্ছে এইসব সিঙ্কহোলে। স্থানীয় অর্থনীতি লাভবান হচ্ছে। চীনের
সিঙ্কহোলে নেমে সেখান থেকে ইন্সটা রীল, ফেসবুক লাইভ ইত্যাদি এখন বেশ জনপ্রিয় একটা
অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম। চীন সরকার অবশ্য পিছিয়ে নেই। এইসব পর্যটকের নেশায় মদত
দেওয়ার জন্য এইসব পাতালগহ্বরে বানিয়ে দিয়েছে লিফট, সিঁড়ি, রোপওয়ে, জিপলাইন ইত্যাদি।
এবং বুঝতেই পারছেন যে সেগুলো ভারতের মত জুগাড় টাইপের সিঁড়ি নয়। একদম হেলথ এন্ড
সেফটি রেগুলেশান মেনে তৈরি শক্তপোক্ত সিঁড়ি। যেমন, পৃথিবীর সবথেকে গভীর, শাওঝাই
পাতালগহ্বরের জন্য রয়েছে ২৮০০ ধাপের সিঁড়ি। আর এটাও বুঝতে পারছেন যে, এরকম
নিরাপদ সিঁড়ি, জিপলাইন ইত্যাদি তৈরির জন্য পরিবেশ দূষণ কতটা হতে পারে।

আমরা বাংলায় এগুলোকে পাতালগহ্বর বললেও চীনের স্থানীয় ভাষায় এদের বলে “তিয়েনকিং”,
মানে স্বর্গমুখ। মেক্সিকো বা পাপুয়া নিউ গিনির মত দেশে এরকম কিছু সিঙ্কহোল রয়েছে। কিন্তু
চীনের এই বিশেষ অংশে চুনাপাথরের স্তর এবং তার নীচে ফল্গুধারা থাকায় এই এলাকায় এরকম
বিশাল সিঙ্কহোল প্রচুর। মেক্সিকোতে ঠিক এইরকম এলাকা হল ইউকাটান উপদ্বীপ। এখানেও সেই
এক ধরণের ভুস্তর থাকায় এখানেও রয়েছে বেশ কিছু সিঙ্কহোল। এদের বলা হয় সেনোটে
(Cenote)।

তবে মেক্সিকোর সেনোটের সাথে চীনের তিংকিং এর অনেক পার্থক্য রয়েছে।
মেক্সিকোরগুলো খুব বেশি গভীর নয়। মাটির একটু নীচে থাকা সুইমিং পুল। পর্যটকদের এখানে
নিয়ে যাওয়া হয় সাঁতার কাটতেই। কিন্তু চীনের তিয়েনকিং? পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর শাওঝাই
এর গভীরতা জানেন? ২০০০ ফুটের বেশি! এর যে মুখগহ্বর, শুধু সেটারই আয়তন হল দু লক্ষ
চুয়াত্তর হাজার বর্গমিটার!! আর চীনের এইসব সিঙ্কহোলে শুধু হ্রদ নেই; আছে পুরো একটা ভিন্ন
ইকোসিস্টেম। বিশাল বনানী, লতা, গুল্ম আর অবশ্যই হাজার হাজার প্রজাতির প্রাণী। এই একটা
শাওঝাই তিয়েনকিং এর ভিতরেই পাওয়া গেছে ১২০০র বেশি প্রজাতির প্রাণী! সুতরাং এটা বলাই
যায় যে, এক সমুদ্রের গভীর তল ছাড়া এরকম জীববৈচিত্র্য আর খুব বেশি জায়গায় নেই।
এরকম আরেকটা স্থান রয়েছে পৃথিবীতে। সেটা হল ভেনেজুয়েলায়। ভেনেজুয়েলার দক্ষিণে গহন
অরণ্যের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু টেবিল টপ পাহাড়। এর মধ্যে কিছু পাহাড়ের মাথায় এরকম
গভীর গর্ত পাওয়া গেছে।

কিন্তু শুধু জীববৈচিত্র্যই এইসব স্বর্গের মুখের শেষ কথা নয়। এর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল,
এগুলো ভার্জিন টেরিটরি। মানে, আজকে মানুষ এগুলোর মধ্যে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করার আগে
শেষবার এখানে বড় কোনও প্রাণীর পা পড়েছিল হয়ত সেই ডাইনোসরের যুগে। মানে লক্ষ লক্ষ
বছর আগে। তার মানে, এইসব সিঙ্কহোল একদম টাইম ক্যাপস্যুল। এতদিন ধরে মানুষের স্পর্শ
ছাড়া এইসব মহীরুহ, পতঙ্গ, স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখিরা নিশ্চিন্তে ঘর করেছে। কিন্তু এইবার
প্রকৃতির এই শেষ আশ্রয়ে শুরু হয়ে গেছে মানুষের আক্রমণ।
কতজন মানুষ যাচ্ছে এই সিঙ্কহোল ট্যুরিজমে? একটা হিসাব দেখা যাক। আগে মেক্সিকোর হিসাব
দেখি। ইউকাটান উপদ্বীপে বছরে প্রায় ১.৭ কোটি পর্যটক আসেন। হয়ত সংখ্যাটা এখন আরও
বেশি। এর মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ এইসব সেনোটেতে যাবেন। এক একটা এরকম সিঙ্কহোল,
যেখানে সাঁতার কাটা যায়, সেখানে দিনে ২০০০ বা তার বেশি টুরিস্ট আসে। এইসব সেনোটে
যে স্থানে রয়েছে, সেটা ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ এলাকা। কিন্তু এরকম হাজার হাজার টুরিস্ট
এলে সেই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের আর কি থাকে? এখন তো এইসব সেনোটেতে গেলে পুরো পর্যটক
প্যাকেজ হয়। সেনোটেতে স্নান, তারপর মায়া খাদ্য গ্রহণ, মায়া সংস্কৃতির কিছু পরিচয় নিয়ে
বাড়ি ফিরে যাওয়া। খুব তাৎপর্যপূর্ণ একটা তথ্য এখানে দিলাম। হিন্দুধর্মে যেমন মাটির নীচের
কোনও এলাকা পাতাল বলে ধরা হয়, মায়া সংস্কৃতিতেও তাই। প্রাচীন মায়া লোককথায় এইসব
সেনোটে ছিল পাতালের প্রবেশপথ। কিন্তু চীনদেশে এইসব সিঙ্কহোল আবার স্বর্গের প্রবেশপথ।
এইভাবেই দেশে দেশে লোককথা পাল্টে যায়।
যাই হোক, সংখ্যার কথায় ফিরে আসি। চীনের এইসব সিঙ্কহোলে আস্তে আস্তে পর্যটক বাড়ছে। বছরে বেশ কয়েক হাজার তো বটেই। চীন সরকার রাস্তা ইত্যাদি বানাচ্ছে যাতে খুব তাড়াতাড়ি আরও পর্যটক যেতে পারে। সিঙ্কহোল ট্যুরিজম হলে যে প্রকৃতির অনপনেয় ক্ষতি, সেটা তো বুঝলাম। কিন্তু তার আগে জানতে হবে যে এইসব স্বর্গের দ্বারে কী কী প্রাণী রয়েছে। চীনের যে জীববৈচিত্র্য, তার একটা
বড় অংশ রয়েছে শুধু এই মাটির নীচের নিরাপদ আশ্রয়ে। এমনকি বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখেছেন যে এইসব মাটির নীচের গর্তে এমন অনেক প্রাণী বহাল তবিয়তে রয়েছে, যাদের বহু আগেই এই এলাকা থেকে বিলুপ্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। আসলে এই এলাকার দুর্গমতার জন্য এইসব তিয়েংকিং এতদিন মানুষের চোখের অন্তরালে ছিল। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি এদের ঘোমটা সরিয়ে দিচ্ছে। যেখানে মানুষ সহজে যেতে পারে না, সেখানে পৌঁছে যাচ্ছে ড্রোন।
প্রথমেই তো আর মানুষ এইসব গভীর গর্তে নামছে না। প্রথমে ড্রোন বা রোবট নামাচ্ছে। তারপর নিজেরা নেমে কাজ শুরু করছে। আবার সম্প্রতি কিছু সিঙ্কহোল আবিষ্কার হয়েছে গুগল আর্থের সাহায্যে। সরাসরি স্যাটেলাইট ছবি দেখে বিজ্ঞানীরা পৌঁছে যাচ্ছেন এদের কাছে। বিজ্ঞানীরা শুধু গেলে তো আর কিছু বলার ছিল না। কিন্তু এইসব স্থান আবিষ্কারের খবর রটলেই ছুটে যাচ্ছে ট্যুর ম্যানেজাররা, ইন্টারনেটে মুহূর্তে খবর ছড়িয়ে পড়ছে, ডেভেলপাররা টাকার থলি নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন হোটেল, ক্যাফে ইত্যাদি বানাতে। আর তারপরেই ডলার, ইউরো বা ইয়েনের ঝুলি নিয়ে শয়ে শয়ে পর্যটক পাড়ি জমাচ্ছেন এইসব এলাকায়। এদের কাছে এটা একদিনের বা একবেলার আনন্দ। কিন্তু সেই আনন্দের জন্য লক্ষ কোটি বছরের ইকোসিস্টেম তছনছ হচ্ছে প্রতিদিন।
যাই হোক, আগের কথায় ফিরি। কি আছে এইসব সিঙ্কহোলে? গবেষণা তো সবে শুরু হয়েছে। এত তাড়াতাড়ি কি আর সব জানা যায়? কিন্তু মোটামুটি যা জানা গেছে, তাতে এখন অবধি পাওয়া গেছে নানা প্রজাতির বাদুর, সাপ, টিকটিকি। একটা বিটল পোকা পাওয়া গেছে, যার গলা জিরাফের মত লম্বা। এছাড়া সেই দেড় দুহাজার ফুট নীচের সেই ফল্গুধারা দিয়ে সৃষ্টি সরোবরে রয়েছে নানা অদ্ভুত মাছ, এমনকি অন্ধ মাছ। গাছের বা গুল্মের বৈচিত্র্যও কম নয়। কিছু নতুন পাওয়া গাছের মধ্যে রয়েছে রক জেসমিন, লাভ এপল, নতুন প্রজাতির গিংকো বাইলোবা ইত্যাদি। এক বিজ্ঞানী বলেছেন যে, এইসব সিঙ্কহোল আসলে পৃথিবীর জেনেটিক লাইব্রেরি। প্রকৃতি মাটির নীচে এদের বুকে ধরে রেখেছে। দেখা গেছে যে এইসব গর্তে যে সব চেনাশোনা প্রজাতির গাছও রয়েছে, তাদের জিনের ডাইভার্সিটি বাকি জায়গার গাছের থেকে বেশি। তার মানে, ওপরের পৃথিবীতে হারিয়ে গেছে, এরকম জিন এইসব গহ্বরের সিন্দুকে আশ্রিত রয়েছে। আমরা সবাই জানি যে আমাদের সামনে আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য দারুণ বিপদের দিন আসছে। শুধু যে দাবানল, বন্যা, খরা ইত্যাদি বাড়বে, তা তো নয়। তার সাথে সাথে খাদ্য উৎপাদন ভীষণভাবেই বিপদের মুখে পড়বে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এরকম নতুন জিনের সন্ধান পাওয়া কিন্তু খুব তাৎপর্যপূর্ণ। হয়ত এদের মধ্যেই এমন জিন পাওয়া যাবে যেটা এক্সট্রিম আবহাওয়াতেও সেই গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে। এটা মনে রাখতে হবে যে এইসব গর্তের গাছেরা লক্ষ কোটি বছর ধরে যথেষ্ট সঙ্কটপূর্ণ পরিবেশে বেঁচে রয়েছে। ফলে এদের জিনে কিছু বৈশিষ্ট্য তো আছেই। গবেষণা করে সেই জিন আমাদের বার করতে হবে। কে বলতে পারে যে এটাই হয়ত ভবিষ্যতের খাদ্য সুরক্ষার চাবিকাঠি। কিন্তু সেই গবেষণা শুরুর আগেই যদি টুরিস্ট এসে সব ধ্বংস করে দেয়, তাহলে আর থাকবে কী?
স্পেনের আলতামিরা গুহায় ঠিক এইরকম হয়েছিল। এমন সংখ্যায় পর্যটক আসতে শুরু করেছিল যে সেই প্রাচীন গুহাচিত্র প্রায় মুছে যেতে বসেছিল। অবশেষে সেই গুহায় গবেষক ছাড়া সব টুরিস্ট ঢোকা পুরো বন্ধ করে দিতে হয়েছে। হয়ত এইসব সিঙ্কহোলে সেটাই করতে হবে। কিন্তু স্থানীয় মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি যে হচ্ছে, সেটাও ঠিক। সেটা তো না হলে আবার মুশকিল। ভেনেজুয়েলার কথা আগে বললাম। সেখানে সিমা মার্টেল নামে একটা এরকম সিঙ্কহোল আছে। এর নীচে পাওয়া গেছে আশ্চর্য সুন্দর কিছু অর্কিড, যেটা পৃথিবীর আর কোথাও নেই। আর এই গুহায় পাওয়া গেছে স্ট্রোম্যাটোলিথ----ব্যাকটেরিয়া এবং ক্যালসিয়াম এবং সিলিকনের সমন্বয়ে সৃষ্ট এক “জীবন্ত শিলা”। এই “লাইফ ফর্ম” পৃথিবীতে ছিল হয়ত পঞ্চাশ কোটি বছর বা তারও আগে। বাকি সব জায়গায় এটা মুছে গেছে। শুধু এই সিঙ্কহোলে এটা রয়ে গেছে এতদিন ধরে। তার মানে এই সিঙ্কহোল যদি ধ্বংস হয়, তাহলে আমাদের কাছে এই প্রাচীন জীবতত্ত্ব গবেষণার আর কোনও সুযোগ থাকবে না। অবশ্য আশার কথা এটাই যে ভেনেজুয়েলার এই সিঙ্কহোলে এতটাই খাড়া দেওয়াল আর এখানে যাওয়ার জায়গা এতটাই দুর্গম যে এখানে খুব শিগগির ট্যুরিজম শুরুর সম্ভাবনা নেই। কিন্তু চিনে তো তা নয়। আর দুর্গম বলে তরুণ টুরিস্টদের খুব বেশিদিন ঠেকিয়ে রাখাও যাবে না। চিনে তো গর্তের মুখ থেকে দড়ি বেঁধে পর্যটকরা নামছেন। জঙ্গলও দেখা হল, অ্যাডভেঞ্চারও হল।

আর এইসবের ছবি যত ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ছে, ততই আরও বেশি করে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। আমাদের মনে রাখতে হবে যে এখন মাউন্ট এভারেস্টের চুড়োয় লাইন লেগে যায়। সেখানে একটা দুর্গম সিঙ্কহোল কী আর মানুষকে আটকে রাখতে পারে? চিনেই, পৃথিবীর দ্বিতীয় গভীরতম সিঙ্কহোল, দাশিউইতে একটা প্ল্যাটফর্ম বানানো হয়েছে যাতে পর্যটক ৫০০ মিটার নীচে উঁকি মারতে পারেন। সিঙ্কহোল ট্যুরিজম আধুনিক পৃথিবীর ট্যুরিজম সেক্টরে এক দ্রুত বেড়ে চলা অংশ। এটা যে কোনদিন থামবে সেরকম সম্ভাবনা নেই। এক সময়ে এভারেস্ট জয় করলে খবরের কাগজে ছবি উঠত। আর এখন এভারেস্টে হাজার হাজার লোকের লাইন। মানুষ মহাকাশযাত্রাও করছে টাকা দিয়ে। ফলে পর্যটন থামবে না। কিভাবে এই সিঙ্কহোলের মত বিরল কেন্দ্র বাঁচিয়ে রাখা যায়, সেটা আমাদের ভাবতেই হবে।
লেখক পরিচিতি: ডা: রুদ্রজিৎ পাল একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও লেখক।
ছবি: Wikimedia commons
Opmerkingen