top of page

পাগলী পথারের শকুনের ঝাঁক: একটি উদ্ধার-কাহিনী

  • ..
  • May 21
  • 6 min read

পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা কোন মসৃন অভিজ্ঞতা নয়। নানারকম আচমকা বিপদের মুখোমুখি হতে হয় পরিবেশের প্রতি যত্নশীল মানুষ ও কর্মীদের। বিপন্ন শকুনদের নিয়ে তেমন এক অভিজ্ঞতা অসমের পরিবেশকর্মী মানসপ্রতিম দত্তের লেখনিতে।





২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।

সময় ঠিক দুপুর ২.৩৬।

আমাদের লখিমপুর জেলার ঢকুয়াখানার সতীর্থ পরিবেশকর্মী ধ্রুবজ্যোতি চেতিয়া আমাকে ফোন করে বললেন, “মানস দা, একটা বড় ঘটনা ঘটেছে, পাগলী পথারে শকুন পড়ে মরে আছে। আমার সঙ্গী রঞ্জন চেতিয়া এইমাত্র ফোন করে বলল, সাতটা শকুন মরে আছে। আপনি তাড়াতাড়ি আসুন।”

--কথাগুলো শুনে আমার মুখের কথা হারিয়ে গেল।

তিনদিন আগে ধ্রুব আর আমি কঢ়া ঘাটে থাকা শকুনের বাঁশগুলো পর্যবেক্ষণ করে এসেছিলাম। আমরা সেখানে বাচ্চা শকুন দেখেছিলাম। কোনওভাবে সেগুলোই নয়তো! বুকটা কেঁপে উঠল।

না, এখন আর দেরি করা যাবে না। আমি স্কুটির চাবি লাগিয়ে পাগলী পথারের দিকে রওনা দিলাম। পথে পরিবেশকর্মী তথা পু এন ফ’ ওয়াইল্ডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রণ্টু চেতিয়া আমার সঙ্গে যোগ দিলেন। রণ্টুর সঙ্গে পথারে পৌঁছলাম।

ইতিমধ্যে খবরটা ছড়িয়ে পড়েছিল। গিয়ে দেখলাম ধ্রুব একটা সংকটাপন্ন শকুনের সেবায় ব্যস্ত। পাশে সাংবাদিক পুলকজ্যোতি বড়া এবং অন্যান্য সাংবাদিক ও স্থানীয় লোকজন। একজন স্থানীয় ব্যক্তিকে তৎক্ষণাৎ জল সংগ্রহ করতে বলে ধ্রুব হাতে থাকা গ্লাভস পরে শকুনটিকে জল খাইয়ে বমি করানোর চেষ্টা করছেন। পাশে কয়েকটা শকুন মরে পড়ে আছে। তার পাশেই একটা মৃত কুকুর। এই মৃত কুকুরটিই পুরো ঘটনার জন্য দায়ী বলে আমরা সন্দেহ করলাম। জল খাওয়ানোর পর শকুনটি মাংস ও হলুদ রঙের বিষাক্ত জল বমি করে বের করে দিল। ধীরে ধীরে শকুনটি কিছুটা শ্বাস নিতে পারল।



আমরা আলোচনা করে অসুস্থ শকুনটিকে পশু চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করার কথা ভাবছিলাম, কিন্তু আমাদের হাতে সময় খুবই কম ছিল। তাই গাড়ির জন্য অপেক্ষা না করে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চিকিৎসালয়ে আমি আর ধ্রুব আমার স্কুটিতেই শকুনটিকে নিয়ে রওনা হলাম।

গিয়ে দেখি চিকিৎসালয় বন্ধ। দেরি না করে চিকিৎসালয়ের পাশে একটা দোকান থেকে পশু চিকিৎসক ডাঃ রূপম গগৈয়ের ফোন নম্বর নিয়ে ফোনে পুরো ঘটনা জানাতে তিনি আমাদের তৎক্ষণাৎ বন বিভাগের অফিসে শকুনটি নিয়ে যেতে বললেন এবং তিনি শীঘ্রই সেখানে পৌঁছে যাবেন বলে জানালেন।

ইতিমধ্যে শকুনটি দেখতে চিকিৎসালয়ের সামনে অনেক লোক জড়ো হয়েছিল। ধ্রুব জল চাইলে কেউ একজন দোকান থেকে জলের বোতল কিনে এনে নিজেই পাখিটিকে খাইয়ে পরিবেশের প্রতি সচেতনতার নিদর্শন দেখিয়ে বোতলটি আমাদের দিয়ে চলে গেলেন। তার এই পরিবেশ সচেতন মনোভাবের জন্য আমরা তাকে অশেষ ধন্যবাদ জানালাম।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা বন বিভাগের কার্যালয়ে পৌঁছলাম। ডাঃ রূপম গগৈও তৎক্ষণাৎ উপস্থিত হলেন। আমরা বন বিভাগের কার্যালয়ে চিকিৎসা প্রদানে সহযোগিতা করলাম। শকুনটি পরীক্ষা করে তিনি তার সহকারীকে ফোন করে ওষুধ আনতে বললেন। ইতিমধ্যে শকুন উদ্ধারে অভিজ্ঞ ডঃ অমল দত্ত স্যারকে আমি ফোন করেছিলাম। তিনিও এসে পৌঁছলেন। ঘিলামড়া থেকে পশু চিকিৎসক ডাঃ হেমন্ত চুতিয়াও এসে উপস্থিত হলেন।

আমরা আবার পাগলী পথারে রওনা হলাম। ততক্ষণে সাংবাদিক রাজীব বরুয়া এবং প্রতাপ দত্তও উপস্থিত হয়েছিলেন। এই দুঃখজনক সময়ে অন্ধবিশ্বাসে ডুবে থাকা সমাজের একাংশ মানুষ মনে মনে শকুনের পালক, হাড় ইত্যাদি চেয়ে আমাদের বিরক্ত করছিল, তবে আমরা ধমক দিয়ে তাদের তাড়িয়ে দিলাম।



পাগলী পথারে আসার সময় পরিবেশকর্মী বিমান সন্দিকৈ দাদাকে দেখা পেলাম। তাকেও ঘটনাস্থলে আসতে বললাম। আমরা মৃত কুকুরটিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখলাম, কুকুরটির খাওয়ার কোনও চিহ্ন নেই। সম্ভবত অন্য কোথাও খাবার খেয়ে এসে মাংস ভক্ষণ করতে এসে শকুনগুলো অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।

আসলে, বর্তমান সময়ে পথে ঘাটে অনেক গৃহস্থহীন কুকুর দেখা যায়। কুকুরছানার অবস্থায় নরম-তুলতুলে সুন্দর দেখে আদর করে ঘরে আনা মাদি কুকুরের ছানাটি মা হয়ে ছানা জন্ম দেওয়ার পর গৃহস্থের পরিত্যক্ত হয়ে পথের অতিথি হতে হয়। পেটের ক্ষুধার তাড়নায় অনেক দিন মাংস খেতে না পেলে গৃহস্থের পোষা প্রাণীর উপর মুখ দেয়। এই গৃহস্থহীন কুকুরগুলি সাধারণত খোলা মাঠে ছাগল, ছোট গরুর বাছুর মেরে খায়। গৃহস্থরা বিবেক-বুদ্ধি হারিয়ে কুকুর মারার জন্য মৃত প্রাণীর মধ্যে মারাত্মক ফুরাডান/কার্বোফুরান জাতীয় বিষ দিয়ে কুকুরের খাওয়ার জন্য খোলা মাঠে ফেলে রাখে। এই গৃহস্থদের মাথায় এটাও খেলে না যে কুকুরের ঘ্রাণশক্তি প্রবল, তারা কখনোই বিষ মেশানো মাংস খেতে আসে না। কিন্তু শকুন পাখিদের ঘ্রাণ নেওয়ার ক্ষমতা নেই। ফলে খোলা মাঠে ফেলে রাখা বিষ মেশানো খাবার শকুনরা খেয়ে মৃত্যুমুখে পড়ে।


আমরা নিশ্চিত হলাম যে অন্য জায়গায়ও মৃত শকুন বা অসুস্থ শকুন পাওয়া যেতে পারে।

আমি ধ্রুবকে বললাম- এখানে আরও শকুন থাকতে পারে। আমাদের খোঁজাখুঁজি করা উচিত।

তৎক্ষণাৎ কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তির সঙ্গে আমি, রণ্টু, ধ্রুব এবং বিমান দা পাশের বাঁশঝাড় ও জঙ্গলে শকুনের খোঁজ শুরু করলাম। খোঁজার সময় আরেকটা শকুন সংকটাপন্ন অবস্থায় পেলাম। তৎক্ষণাৎ বিমান সন্দিকৈ দা এবং ধ্রুব আবার বন বিভাগের কার্যালয়ে রওনা হলেন।

দুটিরই চিকিৎসা শুরু হল। ইতিমধ্যে আমরা বনকর্মীদের সহযোগিতায় মৃত কুকুরটিকে পুঁতে দিয়ে মৃত শকুনগুলোকে পোস্টমর্টেমের জন্য গাড়িতে করে বন বিভাগের অফিসে নিয়ে এলাম। সন্ধ্যায় বিজ্ঞান কর্মী হেমন্ত কুমার বরুয়া এবং মহকুমাধিপতি অরিন্দম বরুয়াও এলেন। চিকিৎসার বিষয়ে জানলেন। ততক্ষণে অন্ধকার হয়ে এসেছিল। কয়েক ঘণ্টা ধরে নিরন্তর চিকিৎসার পর চিকিৎসক শকুন দুটিকে বিপদমুক্ত ঘোষণা করলেন। মনটা একটু হলেও শান্ত হল। সেদিন শকুন দুটিকে বন বিভাগের অফিসের একটি পুরনো ঘরে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। ডাঃ রূপম গগৈ পরদিন মৃত শকুনগুলোর পোস্টমর্টেম করবেন বলে জানালেন।

আমরা আলোচনা করলাম যে পরদিন সকালে ধ্রুব এবং বিমান দা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত শব খোঁজার সিদ্ধান্ত নিলেন। যদি বিষ দেওয়া শব এখনও কাছাকাছি থাকে, তাহলে অন্য শকুনও আবার বিষক্রিয়ার শিকার হতে পারে।



২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৬.৩০-এ আমার ফোন বেজে উঠল। আমি তখন জুয়ালের পাশে বসে ছিলাম। ফোনের স্ক্রিনে উঠল - যাযাবরী বিহঙ্গ। আসলে ধ্রুবের নাম এই নামে আমার মোবাইলে সেভ করা আছে। ফোন রিসিভ করতেই ধ্রুব বলল- ঘটনাস্থল থেকে আধা কিলোমিটার দূরে একটা মৃত গোরুর বাচ্চা কুকুর খাচ্ছে দেখে আমরা পরীক্ষা করে দেখলাম এই গোরুর বাচ্চা খেয়েই শকুনগুলো মারা গেছে এবং অসুস্থ হয়েছে।

ডাঃ রূপম গগৈ বিমান দাকে ফোন করে বললেন, তিনি সকাল নয়টায় বন বিভাগের কার্যালয়ে পৌঁছে মৃত শকুনগুলোর পোস্টমর্টেম করবেন এবং বাকি দুটি শকুনের চিকিৎসা করবেন।

আমি গা-পা ধুয়ে বন বিভাগের কার্যালয়ের দিকে রওনা হওয়ার সময় আবার ফোন বেজে উঠল। ওপার থেকে বিমান দা বললেন- একটা ভালো খবর আছে মানস। ধ্রুব আর আমি কঢ়া ঘাটে থাকা শকুনগুলো দেখে এলাম। আমরা দেরি না করে কঢ়া ঘাটে রওনা হলাম। গিয়ে দেখি একটা গাছে পাঁচটা আর আরেকটা গাছে দুটি শকুন বসে রোদ পোহাচ্ছে এবং সবগুলো বাঁশে বাচ্চা আছে। মৃত শকুনগুলো এদের নয়।

সকাল নয়টায় আমরা বন বিভাগের কার্যালয়ে পৌঁছলাম। ইতিমধ্যে শকুনগুলো কী খেয়ে এমন হয়েছে তা নির্ধারণের চেষ্টা করছিলাম। ৯:২০-এ দেবজিৎ ফুকন এসে পৌঁছলেন। সাংবাদিক রাজীব বরুয়া আমাদের সঙ্গ দিলেন। চিকিৎসক, বন বিভাগের লোক, সাংবাদিক এবং আমাদের টিমের উপস্থিতিতে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ওঠা শকুনটিকে মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেওয়া হল।

চিকিৎসাধীন আরেকটি শকুনকে দুপুরে একটা স্যালাইন এবং কয়েকটা ইনজেকশন দেওয়ার পর আগের চেয়ে কিছুটা সুস্থ হয়। আবার বন বিভাগের কার্যালয়ের আগের দিনের ঘরে শকুনটিকে রাখা হল।



২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সকালে ফোন করে খবর নিতে চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে শকুনটিকে ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিলেন। পরামর্শ অনুযায়ী আমরা আলোচনা করে দুপুর ১২:০০-এ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। ছাড়ার জন্য চিকিৎসক ডাঃ রূপম গগৈ, দেবজিৎ ফুকন, বিমান সন্দিকৈ, ধ্রুবজ্যোতি চেতিয়া, সাংবাদিক প্রতাপ দত্ত, রাজীব বরুয়া, বন বিভাগের লোকজন এবং আমি বন বিভাগের অফিসে মিলিত হলাম।

চিকিৎসক আবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে শকুনটি সুস্থ হয়েছে বলে জানালেন। আমরাও ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম। আলোচনা অনুযায়ী ঢকুয়াখানার কোয়াবাড়ি দলনিতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। আমরা একটা গাড়ি ভাড়া করে কোয়াবাড়ি দলনির দিকে রওনা হলাম। গাড়িতে বনকর্মী বৃষভ দাস, আমি এবং ধ্রুব উঠলাম। আরেকটা গাড়িতে বাকিরা কোয়াবাড়ি দলনির দিকে রওনা হলেন। সকলের উপস্থিতিতে আমরা কোয়াবাড়ি দলনিতে শকুনটিকে ছেড়ে দিলাম। ছাড়ার প্রায় দশ মিনিট পর শকুনটি উড়ে গিয়ে দলনিতে পাখি দেখার জন্য তৈরি ওয়াচ টাওয়ারের শীর্ষে বসল। সেখানে সে বিশ্রাম নিল।

আমরা তার উড়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম, কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত সে সেখানে বিশ্রাম নিয়ে ডানা ঝাঁপটে জায়গা বদল করে এদিক-ওদিক যাচ্ছিল।

সাধারণত বন্ধ ঘরে থাকার কারণে এমন হয় বলে আমরা অনুভব করলাম এবং আলোচনা অনুযায়ী তাকে সেখানে বিশ্রাম নিতে দিয়ে আমরা বাড়ির দিকে রওনা হলাম।

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সকাল থেকে ধ্রুবের ফোন।

"মানস দা, পাখিটা এখনও সেখানেই আছে। দুপুর পর্যন্ত দেখি। না হলে রেসকিউ করতে হবে।"

"ঠিক আছে। দেখো। সে ডানা ঝাঁপটাচ্ছে, দুপুরের মধ্যে উড়ে যাবে" - বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলাম।



দুপুরে আমি ঢকুয়াখানার দিকে রওনা হলাম। প্রয়োজনে শকুনটিকে রেসকিউ করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হলাম। কোয়াবাড়ি দলনিতে পৌঁছে দেখি- শকুনটি তার জায়গায় উড়ে গেছে। আমি তৎক্ষণাৎ ধ্রুবকে ফোন করলাম-"ধ্রুব, শকুনটি তার জায়গায় উড়ে গেছে।"

"থামো থামো, আমি দলনির দিকে যাচ্ছি।"

কিছুক্ষণ পর ধ্রুবও দলনিতে পৌঁছলেন। বিমান সন্দিকৈ দাও এলেন। শকুনটি উড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে আমাদের মুখে হাসি ফুটল। চোখের সামনে ছয়টা শকুনের মৃত্যুর মাঝে দুটি শকুনকে উদ্ধার করে সুস্থ করে প্রকৃতির মাঝে ছেড়ে দেওয়ার সুখানুভূতি আমাদের মনে একটু আনন্দের বন্যা বয়ে দিল।

এটা ভালো লাগার কথা যে, আমরা যতটা সম্ভব মানুষের মাঝে গিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। জেনে ভালো লাগবে যে, গত বছর থেকে আমাদের এই অঞ্চলে শকুনের জনসংখ্যা বেড়েছে এবং মৃত্যুর হার শূন্য হয়ে আছে।



লেখক পরিচয়: মানস প্রতিম দত্ত একজন প্রকৃতি কর্মী, প্রকৃতি লেখক এবং বর্তমান ঢকুয়াখনা উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, লখিমপুর, অসমের স্নাতক শিক্ষক। 




 

Comentários


86060474-00b1-415d-8c11-9c4471c9c5e7.png
Royal_Bengal_Tiger_Kanha.JPG

Editor: Dr. Sumanta Bhattacharya
Co-editor: Dr. Oishimaya Sen Nag

  • Facebook

follow our facebook page to stay updated

© 2021 by Boney Pahare. All rights reserved.

bottom of page